বাচ্চাদের লেখাপড়ার বিষয়বস্তুর দিকে তখনকার সরকার খুব কড়া নজর রাখতো। আর মেয়েদের জন্য স্কুল-কলেজে যাওয়া ছিল একদমই নিষিদ্ধ।
মারি এবং তার বোন ছিল ওই গোপন স্কুলের ছাত্রী। লেখাপড়ায় অনেক আগ্রহ থাকলেও লুকোচুরির জীবন একদমই ভালো লাগছিল না তাদের। একদিন তারা শোনে, প্যারিসে একটা বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেখানে মেয়েরা লেখাপড়া করতে পারে। তাই বোনের সঙ্গে মারি ফ্রান্সে চলে আসে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে বিজ্ঞান নিয়ে লেখাপড়া ও গবেষণা শুরু করে।
গবেষণা করতে গিয়ে এক অদ্ভুত ব্যাপার খেয়াল করে মারি। কিছু কিছু খনিজ পদার্থ আছে যা-কিনা তেজষ্ক্রিয়। এগুলো থেকে শক্তিশালী রশ্মি বের হয় এবং অন্ধকারে সেগুলো জ্বলজ্বল করে।
মারি বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এসব পদার্থের বৈশিষ্ট্যগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগে। কখনো কখনো মারি এসব পদার্থে আগুন ধরিয়ে দেয়, কখনো ঠাণ্ডার মধ্যে রেখে দেয়, আবার কখনো সারা রাত জেগে অন্ধকারে বসে তেজষ্ক্রিয় পদার্থের উজ্জ্বল আলোক শিখার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।
এমন অদ্ভুত গবেষণা দেখে মারির স্বামী পিয়ের নিজের গবেষণা ছেড়ে মারির সঙ্গে তেজষ্ক্রিয় পদার্থ নিয়ে গবেষণা শুরু করে। কিছুদিন পর তারা দু’জন মিলে ‘রেডিয়াম’ ও ‘পোলিয়াম’ নামে নতুন দু’টি তেজষ্ক্রিয় পদার্থ আবিষ্কার করেন।
বৈজ্ঞানিক গবেষণার কারণে মারি দু’টি নোবেল পুরস্কার পান। মেয়েদের মধ্যে মারিই প্রথম নোবেল পুরস্কার বিজয়ী।
নিজের আবিষ্কারগুলোর বিক্রি করে মারি অনেক টাকা আয় করতে পারতো। কিন্তু মারি সবাইকে এগুলো বিনামূল্যে দান করে দেন। মজার ব্যাপার হলো, তেজষ্ক্রিয়তা নিয়ে গবেষণার কারণে মারির নোটখাতা ও ল্যাবের যন্ত্রপাতিগুলো এতোবছর পরেও তেজষ্ক্রিয়তা ছড়াচ্ছে। এগুলো দেখতে চাইলে তোমাকে নিরাপত্তামূলক পোশাক ও দস্তানা পরে নিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৮
এনএইচটি/এএ