সাদারা কখনও কালোদের সঙ্গে একই দোকানে বাজার করতো না। এমনকি পাবলিক বাসে চড়ে কোথাও যেতে চাইলেও বসতে হতো আলাদা সিটে।
এমনই এক সাদা-কালোর দুনিয়ায় জন্ম নেন রোসা পার্ক। সাদা-কালোর রেষারেষি দেখতে দেখতে বড় হন তিনি। নিজে কালো হয়ে জন্মানোর কারণে মাঝে মধ্যে রাগ হতো রোসার। কিন্তু ভাগ্যকে মেনে নেওয়া ছাড়া আর কিছুই যেন করার ছিল না। কারণ, এসব নিয়ে প্রতিবাদ করলেই জেলখানায় আটকে রাখতো পুলিশ।
প্রতিদিনের মতোই রোসা একবার বাসে চড়ে বাসায় ফিরছিলেন। প্রতিদিনের মতোই এবারও তিনি বসেছিলেন পেছনের দিকে, কালোদের জন্য আলাদা করা একটা সিটে। জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্যগুলো দেখছিলেন। প্রতিদিনের মতোই ভাবছিলেন বাসায় ফিরে ডিনারের জন্য কী রান্না করা যায়।
ঠিক এমন সময় বাসে একজন সাদা চামড়ার লোক ওঠেন। কিন্তু সাদাদের জন্য আলাদা করা সামনের দিকের সব সিট আগে থেকেই ভরে ছিল। তাই বাসের ড্রাইভার রোসাকে সিট ছেড়ে দিতে বলেন।
রোসা সঙ্গে সঙ্গে বলেন, না!
এই ‘না’ বলার কারণে বাসায় ফিরে আর ডিনার করা হয় না রোসার। ওই রাত তাকে কাটাতে হয় জেলখানায়। কিন্তু রোসার একটি সহসী ‘না’ দেখিয়ে দেয়, অবিচারের প্রতিবাদ করাও সম্ভব।
এ ঘটনার প্রতিবাদে রোসার বন্ধুরা শহরের সব বাস বর্জন করে। আসতে আসতে শহরের প্রতিটা কালো চামড়ার মানুষ বাসে চড়া বন্ধ করে দেয়। যতদিন পর্যন্ত কালো ও সাদাদের জন্য আলাদা আইন তুলে নেওয়া না হয়, ততদিন তারা আন্দোলন চালিয়ে যায়।
৩৮১ দিন আন্দোলনের পর অদ্ভুত আইনগুলো তুলে নেয় সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু ততদিনে রোসার কথা আশপাশের শহরগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। নিজের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে নামে বাকিসব শহরের কৃষ্ণাঙ্গরা। এবারের দাবি, পুরো দেশ থেকে বৈষম্যমূলক আইন তুলে নিতে হবে।
এভাবে দশ বছর সময় লাগে পুরো দেশ থেকে কালো ও সাদাদের জন্য আলাদা আইনগুলো তুলে নিতে। এজন্য সবাই ধন্যবাদ জানায় রোসাকে। কারণ, পুরো একটি দেশের আইন ব্যবস্থাকে পাল্টে দিয়েছে রোসার একটি ‘না’ বলার ঘটনা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৮
এনএইচটি/এএ