ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৮৪)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৮
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৮৪) রহস্য দ্বীপ

[পূর্বপ্রকাশের পর]
আজ রাতে আর পাহারা দিয়ে কাজ নেই, জ্যাক বলে। সবাই পাহাড় থেকে নেমে আসে। সবকিছুই তাদের পরিকল্পনা মতো চলছে। ওরা তাদের আগুনের কাছে এসে বসে এবং রাতের খাবার খায়, নিজেদের আগের দিনের চেয়ে সুখী বলে মনে হয়।
সম্ভবত, কেউ আর তাদের খুঁজতে আসছে না- এবং যে করেই হোক, কেউ এসে পড়লে করণীয় সবকিছু ওরা আগেভাগেই ঠিক করে রেখেছে। 

পরদিন বাচ্চারা আবারও পালা করে পাহারা দেয়, এবং এর পরদিনও। তৃতীয়দিন যখন নোরার পালা চলছিল, তার মনে হয় হ্রদের দূরপ্রান্তে যেখানে ঘনবন বেড়ে উঠেছে সেখানে সে লোকজনের আনাগোনা দেখতে পাচ্ছে।

সে মৃদু শিস দিয়ে জ্যাককে ডাকে। উপরে উঠে এসে সেও দেখতে থাকে।

হুম, তুমি ঠিকই বলেছ নোরা, সবশেষে জ্যাক বলে। ওখানে লোকজন দেখতে পাচ্ছি। ওরা অবশ্যই কিছু একটা বা কাউকে খুঁজে বেড়াচ্ছে!

ওরা কিছুক্ষণ সেদিকে তাকিয়ে থাকে এবং তারপর অন্যদের ডাকে। পেগি আগুন নিভিয়ে ফেলে, তাই সেখানে এখন কোনো আগুন জ্বলছে না। ওরা সবাই পাহাড়ের ওপর এসে ভিড় করে, সেখানে বেড়ে ওঠা লম্বা ফার্নের আড়াল থেকে মাথা বের করে উঁকি দিয়ে দেখতে থাকে।

ওদিকে দেখো! জ্যাক বলে। খোঁজ চলছে! এখানে আসতে এক কি দু’দিন লাগতে পারে। আমাদের খুব সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে!

ঠিক আছে, সবকিছু তো তৈরিই, পেগি বলে। মনে হচ্ছে ওরা শিগগিরই চলে আসবে, যদি আসেই তাহলে এই দীর্ঘ অপেক্ষা আমার আর ভালো লাগছে না। এতে আমার পেটের ভেতরটা ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা মনে হচ্ছে আমারও ওরকমই লাগছে, মাইক বলে। মনে হচ্ছে এখন থেকে সঙ্গে একটা গরম পানির বোতল নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হবে! 

কথাটা শুনে সবাই হেসে ওঠে। ওরা আরো কিছুক্ষণ তাকিয়ে দেখে এবং তারপর জ্যাককে পাহারায় রেখে, সবাই পাহাড় থেকে নেমে আসে।

পরের দু’দিন তেমন কিছুই আর ঘটে না, যদিও শিশুরা ভাবছে ওরা লেকের ওপাড়ে ঝোপের ভেতর লোকজনের ঘোরাফেরা আর তাদের খোঁজাখুজি করতে দেখেছে। সকালে মাইক পাহারায় থাকে এবং সতর্ক দৃষ্টি রাখে। আগের মতোই নোরা মুরগিদের খাবার খাওয়ায় ও জ্যাক ডেইজির দুধ দোয়ায়।  

মাইক কিছু একটা দেখতে পায়! সে উঠে দাঁড়ায় এবং তাকিয়ে দেখে-হ্রদের একেবারে দূরপ্রান্তে কিছু একটা তার চোখে পড়ে, যেদিকে মাইক বাজার করতে যেতো। একটা নৌকা! এবার আর ঘুণাক্ষরেও কোনো ভুল হয় না- ওটা একটা নৌকাই, আর যথেষ্ট বড়ও!

মাইক অন্যদের ডাকে এবং ওরা সবাই হুড়াহুড়ি করে ওপরে উঠে আসে। হুম, তখনই জ্যাক বলে। ঠিকই তো ওটা একটা নৌকা- ভেতরে চারজন লোকও আছে দেখছি। এসো, বাজে খরচ করার মতো হাতে একটুও সময় নেই। এখানে নৌকা ভেড়াবার মতো একটাই জায়গা রয়েছে- আর সেটা হলো আমাদের এই দ্বীপ। তোমাদের যা যার কাজ করো গিয়ে, সবাই যাও এবং দেখো একটুও ভয় কোরো না!

বাচ্চারা তড়িঘড়ি করে যে যার কাজে চলে যায়। জ্যাক ডেইজিকে আনতে যায়। মাইক মুরগি সামলাতে চলে যায়। পেগি আগুনের নেভানো অবশেষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে, কেটলি, সসপ্যানসহ টুকটাক জিনিসপত্র আর বেঁচে যাওয়া খাবার নিয়ে সৈকত থেকে গুহার দিকে রওয়ানা হয়। নোরা লতা-গুল্ম দিয়ে তাদের বীজ বোনা জমির টুকরো সব ঢাকতে ছুটে। সব কাজ করার মতো সময় কি ওদের হাতে আছে? নৌকা ভর্তি লোক এসে রহস্য দ্বীপে নামার আগেই কি ওরা ভালো মতো লুকিয়ে পড়তে পারবে?

চলবে…

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৮
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।