ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

গল্পে গল্পে অঙ্ক শিখি

এক বক্স চকলেট

ইমরুল ইউসুফ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২২ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২২
এক বক্স চকলেট

কিছুতেই ঘুম আসছে না তোতনের। শুয়ে শুধু এপাশ ওপাশ করছে।

কেবলই মনে হচ্ছে বড় মামা আসবে কখন। কারণ বড় মামা আসা মানেই চকলেটের বক্স আসা। আর চকলেটের বক্স মানেই সারাদিন চুকচুক করে চকলেট খাওয়া। এজন্য বড়ো মামাকে তোতন ‘চকলেট মামা’ বলে ডাকে। মামা এতে একটুও রাগ করেন না। বরং কাছে টেনে নিয়ে বলেন, তোদের জন্য দেখছি চকলেট তৈরির কারখানা খুলতে হবে।

এমন সময় দরজা খোলার শব্দ হলো। বড় মামার গলা শুনতে পেল তোতন। কিন্তু বিছানা ছেড়ে উঠল না। কারণ মা যদি জানতে পারেন এত রাতে সে জেগে আছে তাহলে রক্ষা নেই। নির্ঘাত মার খেতে হবে। এজন্য তোতন ঘুমের ভান করে থাকলো। তোতনের ছোট দুই ভাই বোন ঘুমিয়ে গেছে বেশ আগে। তারপরও তোতন মাথাটা একটু উঁচু করল। দেখতে চেষ্টা করল রোকন ও স্বর্ণা ঘুমাচ্ছে কি না।

হ্যাঁ, তারা ঘুমে অচেতন। তার মানে বেশি বেশি চকলেট খাওয়া যাবে আজ। ‘ভাইয়া এতগুলো চকলেট নিয়ে এসেছো কেন? চকলেট খেয়ে খেয়েই স্বর্ণার দাঁতের অবস্থা খারাপ। তোতন, রোকনের দাঁতের অবস্থাও ভালো না’। বললেন, তোতনের মা। মামা বললেন ‘কিছুই হবে না রে রাবু। এই বয়সে একটু চকলেট খাবে না তো কী খাবে। যা চকলেটের বক্সটা ওদের ঘরে রেখে আয়’।

মামার এই কথা শুনে তোতন মনে মনে খুব খুশি হলো। চোখ বন্ধ করে চকলেটের জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। এমন সময় মা ঘরে ঢুকলেন। খাটের পাশের টেবিলে চকলেটের বক্সটি রাখলেন। মা ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর চোখ খুলল তোতন। বিছানা থেকে উঠে ধীরে পায়ে গেল চকলেটের বক্সের কাছে।

বক্সটি খোলার পর তিন ভাগের মধ্য থেকে এক ভাগ চকলেট প্যান্টের পকেটে ভরল। বাকি দুই ভাগ রেখে দিলো রোকন ও স্বর্ণার জন্য। একটি চকলেট মুখে দিয়ে বাকিগুলো বালিশের নিচে রেখে দিলো তোতন। তারপর চকলেট খেতে খেতে ঘুমিয়ে পড়ল।  

মাঝ রাতে ঘুম ভাঙলো রোকনের। রোকন দেখলো পড়ার টেবিলের ওপর অনেকগুলো চকলেট। রোকন তখন করল কী ওই চকলেটগুলোর মধ্য থেকে তিন ভাগের এক ভাগ নিয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়ল। শেষ রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল স্বর্ণার। স্বর্ণা বালিশ থেকে মাথা তুলে দেখল তার বড়ো দুই ভাই অঘোরে ঘুমাচ্ছে। আর ভাইয়াদের পড়ার টেবিলের ওপর একটি চকলেটের বক্স।

সে তখন উঠে চকলেটের বক্স থেকে তিন ভাগের এক ভাগ চকলেট নিল। ভাবল কাল সকালে চকলেটগুলো মজা করে খাবে।

সকালে মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙলো তিন ভাই বোনের। ঘুম থেকে জেগে তিন ভাইবোন এমন ভাব করল যে তারা এইমাত্র চকলেকেটর বক্সটি দেখেছে। ‘ও চকলেট’ বলে তারা ৩ জন দৌড়ে টেবিলে রাখা চকলেটের বক্সের কাছে গেল। তোতন বক্সটি খুলল। একটি একটি করে চকলেটগুলো গুনলো তোতন। দেখলো বক্সে মোট ২৪টি চকলেট আছে।

এরপর তিন ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ আটটি করে চকলেট তার ছোট দুই ভাই বোনের হাতে দিলো। আর নিজে নিল আটটি চকলেট।

বন্ধুরা, তোমাদের এখন মাথা খাটিয়ে বলতে হবে বক্সে মোট কতোটি চকলেট ছিল। অর্থাৎ তোতনের বড় মামা মোট কতোটি চকলেট নিয়ে এসেছিলো? সেই সঙ্গে তোতন, রোকন ও স্বর্ণা সকালে ভাগে পাওয়া ৮টি চকলেটসহ মোট কতোটি করে চকলেট ভাগে পেয়েছিল?


উত্তর মিলিয়ে নাও : তোতনের বড় মামার আনা চকলেটের বক্সে মোট ৮১টি চকলেট ছিল। এর মধ্য থেকে রাতের বেলা তোতন ৩ ভাগের ১ ভাগ অর্থাৎ ২৭টি এবং সকাল বেলা ৮টি এই মোট ৩৫টি চকলেট ভাগে পেয়েছিল। মেজ ভাই রোকন রাতের বেলা বাকি ৫৪টি চকলেটের ৩ ভাগের ১ ভাগ অর্থাৎ ১৮টি এবং সকাল বেলা ৮টি এই মোট ২৬টি চকলেট পেয়েছিল। আর ছোট বোন স্বর্ণা রাতে বক্সে থাকা বাকি ৩৬টি চকলেটের ৩ ভাগের ১ ভাগ অর্থাৎ ১২টি এবং সকাল বেলা ৮টি এই মোট ২০টি চকলেট পেয়েছিল। তাহলে চকলেটের মোট সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৫+২৬+২০= ৮১।

বাংলাদেশ সময়: ০৭১৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২২
এসআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।