ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বান্দরবানে কেএনএফ প্রধানসহ ২০ জনের নামে হত্যা মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপেন্ডন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩
বান্দরবানে কেএনএফ প্রধানসহ ২০ জনের নামে হত্যা মামলা

বান্দরবান: বান্দরবানে জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়ার আমির ও কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) প্রধানসহ ২০ জনের নামে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে নুরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে বান্দরবানের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে এই মামলার আবেদন করেন।

নুরুল ইসলামের বাড়ি কুমিল্লায়। তিনি তার ছেলে আমিনুল ইসলাম, ওরফে আল আমিনকে (২৩) হত্যার পর লাশ গুম করার অভিযোগে এই হত্যা মামলার আবেদন করেন। আদালতের বিচারক মো. নাজমুল হোসেন আবেদনটি এজাহার হিসেবে নিয়ে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে বান্দরবানের রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আবেদনে জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়া’র আমির আনিসুর রহমানকে প্রধান আসামি এবং প্রধান উপদেষ্টা শামীম মাহফুজকে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সশস্ত্র দল কেএনএফের প্রধান নাথান লনচেও ওরফে নাথান বম, সামরিক শাখার ভাঙুর লিয়ান, লাল মোহন রিয়াল ওরফে কর্নেল সলোমন, লালদন সাং বমসহ সর্বমোট ২০ জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে ১১ জানুয়ারি র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার পাঁচ জঙ্গিও রয়েছেন।  

লিখিত অভিযোগে নুরুল ইসলাম উল্লেখ করেন, আসামিরা তার ছেলে আমিনুলকে ধর্মীয় মিথ্যা প্রলোভনে ফুসলিয়ে কুমিল্লা থেকে বান্দরবানে কেএনএফের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্নভাবে জানতে পারেন, তার ছেলের মতো আরও অনেককে প্ররোচনা দিয়ে জঙ্গি সংগঠন শারক্বীয়ায় সম্পৃক্ত করা হয়। বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে কেএনএফের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে নিয়ে যায় তাদের। র‌্যাবের হাতে ১১ জানুয়ারি গ্রেফতার ব্যক্তিরা স্বীকার করেছেন, তার ছেলে আমিনুল ভুল বুঝতে পেরে শারক্কীয়ায় থাকতে অপারগতা প্রকাশ করে এবং বাড়ি ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। এজন্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ২০২২ সালের ২৪ থেকে ২৬ নভেম্বরের মধ্যে বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম লুমউয়াল পাড়া (লুয়াং মুয়াল পাড়া) এলাকায় তার ছেলেকে হত্যা করে অজ্ঞাতস্থানে মরদেহ গুম করেছে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. খলিলুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাদী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি অভিযোগ করেন। অভিযোগটি আমলি আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজমুল হোসেন এজাহার হিসেবে নিয়ে রুমা থানার ওসিকে তদন্ত করে পাঁচ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ১১জানুয়ারি বান্দরবানে র‌্যাবের অভিযানে রুমা ও থানচি উপজেলা থেকে ৫ জঙ্গি গ্রেফতার হয়। পরে গ্রেফতার জঙ্গিদের দেওয়া তথ্যমতে আদালত তাদের এক সহকর্মীর কবর খুঁড়ে লাশ উত্তোলনের জন্য নিদের্শনা দেন। পরে রোববার (১৫ জানুয়ারি) বান্দরবানের রুমা উপজেলার প্রাংসা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গম লুয়ং মুয়াল পাড়া এলাকায় এক জঙ্গির মরদেহ উদ্ধারে যায় পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনীর একটি টিম। সেসময় পাহাড়ে সন্ধান পাওয়া একটি কবর খুড়ে তাতে কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি। তবে সেখানে আমিনুল ইসলাম, ওরফে আল আমিনের (২৩) কিছু পোশাক পাওয়া যায়। তার বাবা নুরুল ইসলাম সেখানে তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩
এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।