ঢাকা: প্রাইভেটকার চাপায় রুবিনা আক্তার নামে এক নারী নিহতের মামলার আসামি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আজহার জাফর শাহ। চলতি বছর ১৩ জানুয়ারি কারাগারে থাকাবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আইন অনুযায়ী ফৌজদারি মামলায় মৃত্যুর পর আসামি অব্যাহতি পাবে। তবে আসামিকে অব্যাহতির সুপারিশ সম্বলিত চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রায় ৫ মাসেও আদালতে দাখিল করা হয়নি৷
রোববার (৭ মে) প্রতিবেদন দাখিলের দিন থাকলেও তদন্ত কর্মকর্তা তা দাখিল করেননি৷ তাই ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর আগামী ১১ জুন প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
মৃত ব্যক্তির নামে মামলা চলমান থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমএম আদালতে শাহবাগ থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক নিজাম উদ্দিন ফকির বলেন, নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত কর্মকর্তা আসামিকে অব্যাহতির সুপারিশসহ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন৷ সেই প্রতিবেদন গ্রহণের মাধ্যমে এই মামলার কার্যক্রম শেষ হবে৷
মৃত্যুর পরও মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলে বিলম্বকে, তদন্ত কর্মকর্তার অবহেলা বলে মনে করেন সিএমএম আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান। তিনি বলেন, যেহেতু মামলার একজনই আসামি তাই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল না করাটা তদন্ত কর্মকর্তার খামখেয়ালি। তিনি দায়িত্বশীল হলে একজন মৃত ব্যক্তির মামলা এতদিন চলতো না। এ ধরনের দায়িত্বহীনতা মামলা জট নিরসনের ক্ষেত্রে বড় বাধা।
মামলাটি শুরুতে তদন্ত করতেন নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক আবু জাফর৷ তবে তিনি বদলি হওয়ায় বর্তমানে তদন্তের বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি নীলক্ষেত ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার।
গত ১৩ জানুয়ারি কারাবন্দি অবস্থায় এ শিক্ষকের মৃত্যু হয়। বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষ আদালতকে অবহিত করেছেন।
গত ২ ডিসেম্বর বিকেলে দেবর নুরুল আমিনের সঙ্গে মোটরসাইকেলে রুবিনা আক্তার রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বাসা থেকে হাজারীবাগে বাবার বাড়ি যাচ্ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বিপরীতে টিএসসি অভিমুখী সড়কে একটি প্রাইভেটকার পেছন থেকে তাদের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে নুরুল আমিন মোটরসাইকেলসহ একপাশে ছিটকে পড়েন। রুবিনা গাড়ির নিচে চাপা পড়েন। এ সময় গাড়ির বাম্পারে তার পোশাক আটকে যায়। চালক গাড়ির নিচে আটকে যাওয়া রুবিনাকে নিয়ে বেপরোয়া গতিতে টিএসসি হয়ে নীলক্ষেতের দিকে নিয়ে যান। নীলক্ষেতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তোরণের কাছে গাড়িটি আটকে রুবিনাকে জীবিত উদ্ধার করেন পথচারীরা।
এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান। ওইদিন রাতে রুবিনা আক্তারের ভাই জাকির হোসেন বাদী হয়ে ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনে মামলাটি করেন।
এদিকে আসামি আজহার জাফর শাহ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা অবস্থায় গত ১৩ জানুয়ারি মারা যান।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০২৩
কেআই/জেএইচ