ঢাকা: রাজধানীর খিলক্ষেতে যৌতুকের জন্য দুলালী বেগম (২০) নামে এক গৃহবধূকে হত্যা মামলায় স্বামী হাবিল বাদশাকে (২২) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৮ মে) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক মাফরোজা পারভীন এ রায় দেন।
রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। রায়ের পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রেজাউল করিম সাজার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, দুলালী বেগমের সঙ্গে ২০১৫ সালে হাবিল বাদশার বিয়ে হয়। শাশুড়ি রওশন আরা বেগম তার ছেলে সুমন, জামাই বাদশা ও মেয়ে দুলালীকে নিয়ে খিলক্ষেতে বাস করে আসছিলেন। মা-মেয়ে অন্যের বাসায় ঝিয়ের কাজ করতেন। বাদশা রিকশা চালাতেন। বিয়ের কিছুদিন পর অটোরিকশা কেনার জন্য দুলালীর কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন বাদশা। কিন্তু দরিদ্রতার কারণে যৌতুক দিতে না পারায় দুলালীর সঙ্গে প্রায় ঝগড়া-বিবাদসহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন তিনি।
২০১৭ সালের ২ আগস্ট সকালে রওশন আরা ও তার ছেলে কাজে বেরিয়ে যান। এ সুযোগে ঝগড়ার জের ধরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে দুলালীকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেন। কিন্তু ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য প্রথমে বাদশা দুলালীর পরিবারকে জানায়, সে স্ট্রোক করে মারা গেছে। দুলালীকে গ্রামের বাড়ি শেরপুরে লাশ নিয়ে দাফন করতে বলেন বাদশা। পরে লাশ শেরপুরে নিয়ে গোসল করানোর সময় দুলালীর গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখে স্থানীয় লোকজন আসামি বাদশাকে জেরা করতে থাকেন। এতে বদশা একেক সময় একেক কথাবার্তা বলেন। পরে বাদশা স্বীকার করেন সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে দুলালীকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ৫ আগস্ট দুলালীর মা রওশন আরা বেগম খিলক্ষেত থানায় বাদশার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর খিলক্ষেত থানার উপ-পরিদর্শক (নিরস্ত্র) সহিদুর রহমান আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩১ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০২৩
কেআই/আরবি