ফরিদপুর: ফরিদপুর শহরের পশ্চিম গঙ্গাবর্দী এলাকার বাসিন্দা জিয়া মোল্লা নামে এক ব্যক্তিকে নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে তিনজনকে সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১০ মে) দুপুর দেড়টার দিকে ফরিদপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. শিহাবুল ইসলাম এ রায় দেন। এ সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর এ নৃশংস হত্যার ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের প্রায় নয় বছর পর এ হত্যা মামলার রায় দেওয়া হলো।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ফরিদপুর সদরের কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের পশ্চিম গঙ্গাবর্দী গ্রামের বাসিন্দা মো. বাবলু সরদার (৪৬), শাহিন সরদার (৪০) ও জুবায়ের মোল্লা (৩০)। রায় ঘোষণার পর পুলিশ প্রহরায় তাদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্থানীয় গোবিন্দপুর গ্রামের বাজার থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়িতে ফিরছিলেন জিয়া মোল্লা (৩৫), তার চাচাতো ভাই জিয়া মাতুব্বর (৪৩) ও বন্ধু ইমন প্রামাণিক (৪৪)।
তারা পশ্চিম গঙ্গাবর্ধী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে পৌঁছলে আগে থেকে সেখানে ওৎ পেতে থাকা কয়েকজন ব্যক্তি তাদের ওপর লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে মারাত্মক আহত হন জিয়া মোল্লা ও তার চাচাতো ভাই জিয়া মাতুব্বর। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে অধূনা ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে ওইদিন (৩০ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিয়া মোল্লা মারা যান। পরদিন ০১ অক্টোবর নিহতের বাবা মো. শাহিদ মোল্লা (৭৮) বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ছয়-সাতজনকে আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ফরিদপুরের পরিদর্শক মো. এমারত হোসেন ও মো. শাহজাহান মিয়া তদন্ত করেন। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শেখ শাহ আলম তদন্ত করে নয়জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার বাকি ছয় আসামিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, নয় বছর পর জিয়া হত্যা মামলার রায়ে তিনজন আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এ রায়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে এবং সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০২ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২৩
এসআরএস