ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আইনমন্ত্রী রাজনৈতিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন: খালেদার আইনজীবী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০২৩
আইনমন্ত্রী রাজনৈতিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন: খালেদার আইনজীবী

ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবী বলেছেন, আইনের যে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, সেটি রাজনৈতিক ব্যাখ্যা। রাজনৈতিক বিবেচনার কারণে সরকার আইনে দেওয়া ক্ষমতাটি ব্যবহার করছে না।

খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে আইনমন্ত্রীর ব্যাখ্যার প্রতিক্রিয়ায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে নিজ কার্যালয়ে এমন মন্তব্য করেছেন আইনজীবী কায়সার কামাল।

এর আগে সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, রাষ্ট্রপতির কাছে এটি আমি সাজেস্ট করতে চাই না। আমি এ ব্যাপারে যেটি বলছি, সেটি হচ্ছে সম্পূর্ণ আইনের প্রোভিশনটা কি? রাষ্ট্রপতির কাছে যিনি ক্ষমা চান, তাকে কিন্তু দোষ স্বীকার করে দরখাস্ত করতে হয়। ক্ষমা চাইতে হলে সেটি যিনি ক্ষমা চাইবেন সেটি তার সিদ্ধান্ত, আমার না।  

রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, এটি সাংবিধানিক অধিকার। যে কেউ রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চেয়ে তার সাজা মওকুফ করার জন্য আবেদন করতে পারেন।

খালেদা জিয়ার ভাইয়ের আবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, আইন আবার খোলার অবকাশ নেই। প্রধানমন্ত্রীর যে ক্ষমতা সেটি তিনি প্রয়োগ করেছেন। পুনরায় প্রয়োগ করার সুযোগ নেই।  

আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের পর পর সাংবাদিকদের খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) ধারায় সুস্পষ্টভাবে আছে একজন বন্দি, যিনি দণ্ডিত—   তার সাজা মওকুফ, কমানো ও সাময়িকভাবে সাজা স্থগিত করা যায়। সেটি শর্তযুক্ত বা শর্তহীনও হতে পারে। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে ওনারা শর্ত যুক্ত করে দিয়েছেন।  

৪০১(৬) ধারায় সুস্পষ্ট বলা আছে যে, সরকার চাইলে যেকোনো সময় নির্দেশনা দিয়ে যেকোনো বন্দির ক্ষেত্রে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সে জন্যই বলছি, এটি রাজনৈতিক ব্যাখ্যা হচ্ছে, আইনের ব্যাখ্যা হচ্ছে না।

রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন কি না—এমন প্রশ্নে কায়সার কামাল বলেন, খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতির আদেশে বের হননি। এখনো কিন্তু খালেদা জিয়া নির্বাহীর অধীনে আছেন। কেন নির্বাহীর অধীনে আছেন? কারণ শর্তযুক্ত মুক্তি, অর্থাৎ খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও ব্যক্তিগত বিষয় বলেন—সবকিছু কিন্তু সরকারের নিয়ন্ত্রণে। উনি চাইলেই কিন্তু একটা কিছু করতে পারেন না। অতএব নির্বাহী আদেশে আছে এবং ওনার সব দায়দায়িত্ব কিন্তু নির্বাহীকেই বহন করতে হবে।

দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের দণ্ডিত সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি ছিলেন। এরমধ্যে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে বিএসএমএমইউ-তে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।  

পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে পরিবারের সদস্যদের আবেদনে সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত রেখে তাকে সাময়িক সময়ের জন্য মুক্তি দেয় সরকার। এরপর খালেদা জিয়া রাজধানীর গুলশান অ্যাভিনিউয়ের নিজের বাসভবন ফিরোজায় যান।  

মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ফের মেয়াদ কয়েকবার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ ১২ সেপ্টেম্বর মেয়াদ বাড়ানো হয়। প্রতিবার একই শর্তে তাকে কারাগারের বাইরে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শর্ত অনুযায়ী, তিনি ঢাকার নিজ বাসায় থেকে তার চিকিৎসা গ্রহণ করবেন এবং দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।

 এর মধ্যে খালেদা জিয়ার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ অবস্থায় তাকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিতে চায় পরিবার।

আরও পড়ুন >> বিদেশে খালেদার চিকিৎসায় একটিই উপায় আছে: আইনমন্ত্রী 

বাংলাদেশ সময়:০১১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০২৩
ইএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।