ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ধর্ষণ মামলায় মামুনুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ, জামিনের আবেদন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৪
ধর্ষণ মামলায় মামুনুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ, জামিনের আবেদন

নারায়ণগঞ্জ: হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সফেক্টর এস এম শফিকুল ইসলামকে তৃতীয় দফায় জেরা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে এই জেরা করা হয়।

জেরা শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা আরও একদিন জেরার করার জন্য সময় চাইলে আদালত আগামী ২৩ এপ্রিল পরবর্তী জেরার দিন ধার্য করেছেন। সেই সঙ্গে এদিন মামুনুল হকের জামিন আবেদন করলে আদালত শুনানি শেষে পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন।

এর আগে এদিন সকালে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্য দিয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। সেই সঙ্গে দুপুরে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্য দিয়ে তাকে আদালতে উঠানো হয়। ক্র্যাচে ভর দিয়ে মামুনুল হক আদালতে উঠেন। জেরা শেষে তাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত এই মামলায় ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, আমরা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস এম শফিকুল ইসলামকে তৃতীয় দিনের মতো জেরা করেছি। জেরায় তিনি অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি। ধর্ষণের আলামত তিনি সংগ্রহ করেননি। আমরা আজ তাকে ৭০ থেকে ৮০টি প্রশ্ন করেছি। তিনি একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি। তিনি শুধু বলেছেন জানি না, মনে নেই। এতে বুঝা যায় এটা গোঁজামিলের দায়সারা তদন্ত। এটা একটি মিথ্যা মামলা।

তিনি আরও বলেন, আমরা এই মামলায় মামুনুল হকের জামিন চেয়েছিলাম। যেহেতু তিনি অনেকদিন ধরে কারাগারে আছেন। আমরা মানবিক কারণে জামিন চেয়েছিলাম। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন। আদেশ পরে দেবেন বলে জানিয়েছেন। আশা করি, আমরা ন্যায়বিচারের স্বার্থে জামিন পাব।

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, আসামিপক্ষ ইচ্ছা করেই মামলাটির বিচার কার্যক্রম বিলম্বিত করার জন্য বারবার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জেরা করছেন। এই পর্যন্ত তারা তিন দিন জেরা করেছেন। আরও একদিন সময় চেয়েছেন। সচরাচর একদিনের জেরাই যথেষ্ট হয়ে যায়। রায় তাদের বিপক্ষে যাবে এজন্য তারা দেরি করছেন। এ পর্যন্ত যারা সাক্ষী দিয়েছেন সবাই মামুনুল এই ধর্ষণের সাথে সম্পৃক্ত বলেছেন।  

২০২১ সালের ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে তাকে ঘেরাও করেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর করেন এবং তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। ঘটনার পর থেকেই মামুনুল হক মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় অবস্থান করে আসছিলেন। এ সময় পুলিশ তাকে নজরদারির মধ্যে রাখে।

এরপর ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মামুনুলকে। পরে এ ঘটনায় ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী। তবে ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৪
এমআরপি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।