ঢাকা, বুধবার, ২৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ফিরেছেন সেই জাপানি মা, শুনানি বৃহস্পতিবার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৭ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২৪
ফিরেছেন সেই জাপানি মা, শুনানি বৃহস্পতিবার

ঢাকা: জাপান থেকে আসা দুই মেয়ের জিম্মা এবং আদালত অবমাননার অভিযোগ নিয়ে আপিল বিভাগে শুনানি ১১ জুলাই। এ কারণে আদালতের আদেশ অনুসারে হাজির থাকতে জাপান থেকে দেশে ফিরেছেন মেয়েদের মা ও জাপানি নাগরিক ডা.এরিকো নাকানো।

বুধবার (১০ জুলাই) এ তথ্য জানিয়েছেন এরিকোর আইনজীবী শিশির মনির।  

তিনি জানান, ৯ মে এক আদেশে আপিল বিভাগ ১১ জুলাই শুনানির দিন রেখেছিলেন। আর এদিন এরিকো নাকানোকে হাজির থাকতে বলেছেন। সে অনুসারে তিনি আজ  দুপুর একটায় বাংলাদেশে এসেছেন।

২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানি নাগরিক ডা. এরিকো নাকানো ও বাংলাদেশি আমেরিকান নাগরিক শরীফ ইমরান জাপানি আইনানুসারে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। তাদের ১২ বছরের সংসারে তিনজন সন্তান জন্ম নেয়। এরপর বনিবনা না হওয়ায় দুই মেয়েকে নিয়ে দেশে চলে আসেন ইমরান শরীফ। পরবর্তীতে ২০২১ সালে বাংলাদেশে এসে রিট করেন এরিকো। তখন সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি পারিবারিক আদালতে নিষ্পত্তি করতে বলেন।  

২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান শিশুদের জিম্মা চেয়ে বাবা ইমরান শরীফের মামলা খারিজ করে রায় দেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে পরদিন ইমরান শরিফ আপিল করেন জেলা জজ আদালতে। একই বছরের ১২ জুলাই জজ আদালতেও ইমরান শরীফের আবেদন খারিজ করে দেন। তারপর তিনি হাইকোর্টে রিভিশন করেন। চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি সেই রিভিশন আংশিক মঞ্জুর করে রায় দেন হাইকোর্ট।  

আদেশে আদালত বলেন, বড় মেয়ে জেসমিন মালিকা শরীফের হেফাজত মায়ের পক্ষে নির্ধারণ করা হবে, তবে ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি বিবেচনা করে কন্যা লায়লা লিনা শরীফের হেফাজত প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত বাবার কাছে থাকবে।  

রায়টি প্রকাশ করার পর দুই পক্ষই আপিল করেন। ইমরান শরীফ বড় মেয়েকে চেয়ে এবং এরিকো মেঝ মেয়েকে চেয়ে লিভ ‍টু আপিল করেন। তবে ইমরানের আবেদনে একটি নিষেধাজ্ঞার আবেদন ছিল। যেখানে বলা হয়েছে, মেয়েকে যেন দেশের বাইরে না নেওয়া হয়। এরপর ৯ এপ্রিল আপিল বিভাগ স্থিতাবস্থার আদেশ দেন।  

ইমরান শরীফের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমামের দাবি, সন্তানদের দেশের বাইরে যেতে আদালতের স্থিতাবস্থা ছিল। তা সত্ত্বেও বড় মেয়েকে নিয়ে এরিকো চলে গেছেন। এই কারণে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়।

তখন আইনজীবী মো. শিশির মনির জানান, ৯ এপ্রিল দুপুর একটায় আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন। এই আদেশ হওয়ার আগেই সকাল ১১টার দিকে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে তারা দেশত্যাগ করেন।

শিশির মনির বলেন, হাইকোর্টের রায়ের কোথাও বলেননি যে, বাবা ও মা সন্তানদের নিয়ে দেশত্যাগ করতে পারবেন না। এরপর দুই পক্ষের লিভ টু আপিল এবং ইমরান শরীফের আদালত অবমাননার আবেদনের ওপর শুনানির জন্য ৯ মে কার্যতালিকায় ওঠে। ওই দিন আপিল বিভাগ ১১ জুলাই পর‌্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।

এদিন উপস্থিত থাকতে হবে এরিকো নাকানো ও ইমরান শরীফকে।

আদালতে এরিকোর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও আইনজীবী শিশির মনির। ইমরান শরীফের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আখতার ইমাম। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার রেশাদ ইমাম।

আরও পড়ুন>>>

যে কারণে জাপান থেকে আসা দুই মেয়েকে ভাগ করে দিলেন হাইকোর্ট

বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২৪
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।