ঢাকা, রবিবার, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৮ জুলাই ২০২৪, ২১ মহররম ১৪৪৬

আইন ও আদালত

জেলহাজতে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩১ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৪
জেলহাজতে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব

বরিশাল: আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলার মামলায় বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদারকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।

রোববার (২৮ জুলাই) দুপুরে তাকে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ ইমন।

এর আগে জিয়া উদ্দিন সিকদারকে ঢাকা থেকে অসুস্থ অবস্থায় গ্রেপ্তার করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর পুলিশি হেফাজতে তাকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন জানান, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরতদের হতাহতের ঘটনায় গত ১৯ জুলাই বিকেলে বরিশাল নগরের তন্ময় কমিউনিটি সেন্টারের সামনে থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা কালো পতাকা নিয়ে শোক র‌্যালি বের করেন। শান্তিপূর্ণ ওই র‌্যালিটি নগরের চৌমাথা বাজার পার হতেই সভাপতি-সম্পাদকের নেতৃত্বে মহানগর আওয়ামী লীগ ও শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। হামলায় মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান খান ফারুক, সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদারসহ ১৫-২০ জন আহত হয়। যার মধ্যে গুরুতর আহত ৬-৭ জনকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে এর কয়েকদিন পর ওই ঘটনায় উল্টো বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলা করা হয়।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) কোতোয়ালি মডেল থানায় মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার রাজীব বাদি হয়ে দায়ের করা মামলায় মামলায় মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক, সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদারসহ ২৭ জন নামধারী এবং অজ্ঞাত ৮০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক তদন্ত আমানুল্লাহ আল বারি জানান, মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক উদ্দেশে হাসিলের জানমালের ক্ষতি, দোকান, পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করে। গত ১৯ জুলাই বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীরা রামদা, হকিস্টিক, লাঠি, দা, পিস্তল ককটেল ও বন্দুকসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নগরের সিএন্ডবি রোড বিএডিসির সামনে জড়ো হয়। পরে রাস্তা অবরোধ করে নাশকতা সৃষ্টি করতে গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। খবর পেয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ‌্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর ও সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা সেখানে পৌঁছলে তাদের ওপর হামলা করে। মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব তার সঙ্গে থাকা পিস্তল দিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে গুলি করে। মানববর্ম তৈরি করে তাকে রক্ষা করা হয়।

মামলার নামধারীসহ অজ্ঞাত আসামিদের হামলায় মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গাজি নইমুল হোসেন লিটু, উপ-প্রচার সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জনি, সাজ্জাত সেরনিয়াবাত, নগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেন রনি ও শ্রমিক লীগ নেতা নাসিরউদ্দিনসহ বেশ কিছু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী আহত হওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন বিকেলে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক, সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার আহত অবস্থায় শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি হলেও রাত থেকে তাদের আর পাওয়া যায়নি। বিএনপি নেতাদের দাবি, গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যান বরিশাল মহানগরের শীর্ষ এ দুই নেতা। তবে এর কয়েকদিন পরেই গ্রেপ্তার হন সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৪
এমএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।