ঢাকা: সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানির পর অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ (৩৫) নামে এক আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টে প্রতিবাদ সমাবেশ ডেকেছে আইনজীবীদের বিভিন্ন সংগঠন।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট বারের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম
বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম দুপুর ১টা সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। এ তথ্য জানিয়েছেন ফোরামের সদস্য অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান।
জাতীয় নাগরিক কমিটি
একই সময়ে সুপ্রিম কোর্ট বারের সামনে জাতীয় নাগরিক কমিটি, লিগ্যাল উইং প্রতিবাদ সমাবেশ করবে। এ তথ্য জানিয়েছেন নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ।
এর আগে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানা এলাকায় অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ (৩৫) নামে এক আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় তিনি খুন হন।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আদালতের অদূরে রঙ্গম কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম ওরফে আলিফ (৩৫) সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি)।
তিনি লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে এবং চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য।
তার মৃত্যুর বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে চিন্ময় কৃষ্ণকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ষষ্ঠ আদালতের বিচারক কাজী শরিফুল ইসলামের আদালতে আনা হয়। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দেন। তাকে পুলিশের প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে তার অনুসারীরা বিক্ষোভ করতে থাকে। ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। এলাকার বেশ কয়েকটি স্থাপনা ভাঙচুর করে তারা। এ সময় ওই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিক্ষোভকারীরা আইনজীবী সাইফুলকে চেম্বারের নিচ থেকে ধরে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
তাকে হাসপাতালে নেওয়া দিদার বাংলানিউজকে বলেন, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীরা সাইফুল ইসলাম আলিফকে হাতে, মাথা ও পায়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন একজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চট্টগ্রামের আদালতে সংঘর্ষের ঘটনায় হতাহত ৬-৭ জন চমেক হাসপাতালে আনা হয়। এর মধ্যে একজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। তার মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে রঙ্গম কমিউনিটি সেন্টারের সামনে রাস্তায় কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে সেখান থেকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আমরা সমিতির নেতারা হাসপাতালে আছি।
এদিকে আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চট্টগ্রামে ছয় প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমসহ সংশ্লিষ্টরা এ পরিস্থিতিতে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২৪
ইএস/আরএ