ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মাদারীপুরের এসপির বিরুদ্ধে হাইকোর্টের রুল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১৬
মাদারীপুরের এসপির বিরুদ্ধে হাইকোর্টের রুল

ঢাকা: সরকারি গাছ চুরির মামলায় আসামিদের গ্রেফতারে ব্যবস্থা না নেওয়ায় মাদারীপুর জেলার পুলিশ সুপার, রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও দুই সহকারী উপ পরিদর্শকের (এএসআই) বিরুদ্ধে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
 
এক সম্পূরক আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি রেজাউল হক ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ বুধবার (০৫ অক্টোবর) এ রুল জারি করেন।


 
ওই চার পুলিশের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, চার সপ্তাহের মধ্যে জনপ্রশাসন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
 
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শ ম রেজাউল করিম, কাজী রিয়াজুর রহমান খান ও ব্যারিস্টার এ বিএম সিদ্দিকুর রহমান খান।
  
আইনজীবীরা জানান, রুল জারি ছাড়াও রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাসসহ সরকারি গাছ চুরির অভিযোগে রাজৈর থানার তিন মামলার আসামিদের এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
  
ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে করা এক মামলায়ও গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
 
এসব আদেশের বিষয়ে ১০দিনের মধ্যে বিবাদীদের আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।  
 
চলতি বছর ১ সেপ্টেম্বর রাজৈর থানায় গাছ চুরির অভিযোগে তিনটি মামলা হয়। এর আগে ২০১১ সালে ঢাকার মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে প্রতারণার একটি মামলা হয়। ২০১৪ সালে প্রতারণায় মামলায় বিধান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। সেই থেকে এ মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি হিসেবে পলাতক রয়েছেন চেয়ারম্যান।
 
সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘কে ক্ষমতাধর বিচারপতি, নাকি ইউপি চেয়ারম্যান’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে আদালতে দেওয়া বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের এক বক্তব্যে বলা হয়, কদমবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিধান  বিশ্বাস স্থানীয় আড়ুয়াকান্দি গ্রামের একটি মন্দির থেকে ১৬০ ভোল্টের সোলার প্যানেল চুরি করে তানিজের শ্বশুরবাড়িতে স্থাপন করেছেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। সেই সঙ্গে ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানের সরকারি জায়গা থেকে চারটি গাছ কেটে ব্যক্তিগত ভবনে ব্যবহার করার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে।

এ অভিযোগের বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে নিজে জানানোর পরও তারা কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি বলেও উল্লেখ করেন বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর।  

এরপর ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন বেশ কয়েকটি মামলা করে। এসব মামলারপরে ওই চেয়ারম্যান ‘বিচারপতির বিচার চেয়ে’ ব্যানারে লিখে মানববন্ধন করেন। সেখানে বিচারপতির সম্পর্কে মানহানিকর আরও কথা লেখা হয়। এগুলো পরে ফেসবুকেও দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ফেসবুকে মানহানিকর পোস্ট দেওয়ায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মঙ্গলবার(০৬ সেপ্টেম্বর) মামলা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুজিত চ্যাটার্জি।

এরপর সুপ্রিম  কোর্টের আইনজীবী গাজী মোশতাক আহমেদ ও দক্ষিণ কেরানিগঞ্জের বাসিন্দা ইশতিয়াক আহমেদ একটি রিট দায়ের করেন।

এ রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ০৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র  ঠাকুরের স্বজনদের নিরাপত্তার নিশ্চিত ও বিচারকের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে করা মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী ৩৭ জনের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জমা দিতেও নির্দেশ দেন আদালত। ওই রিট আবেদনের মধ্যে এক সম্পূরক আবেদনের পর বুধবার উক্ত আদেশ দেন হাইকোর্ট।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৬
ইএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।