ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ট্রাইব্যুনাল সরানোর বিষয়টি পুনর্বিবেচেনা করতে মন্ত্রণালয়ের অনুরোধ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৬
ট্রাইব্যুনাল সরানোর বিষয়টি পুনর্বিবেচেনা করতে মন্ত্রণালয়ের অনুরোধ

ঢাকা: সুপ্রিম কোর্ট এলাকা থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি ‘পুনর্বিবেচেনা’ করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে অনুরোধ জানিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

 

আইন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মো. তৈয়বুল হাসান স্বাক্ষরিত চিঠিতে রোববার (৩০ অক্টোবর) এ অনুরোধ জানানো হয়েছে।



গত ১৮ আগস্ট চিঠি দিয়ে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের পুরাতন হাইকোর্ট ভবনটি (ট্রাইব্যুনাল) হস্তান্তরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানান সুপ্রিম কোর্ট। হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন স্বাক্ষরিত ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অনুকূলে পুরাতন হাইকোর্ট ভবনের দখল হস্তান্তর প্রসঙ্গে’ শিরোনামে ওই চিঠিটি পাঠানো হয়।

আইন মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, ‘পুরাতন হাইকোর্ট ভবনটি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক একটি স্থাপনা। পূর্ব বাংলা ও আসাম প্রদেশের গভর্নরের সরকারি বাসভবন হিসেবে এ ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। পরে তা পূর্ব পাকিস্তানের হাইকোর্টে রূপান্তর করা হয়’।

‘১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত অপরাধ, যেমন যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা, ধর্ষণ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধসহ অন্যান্য অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিচারকাজ পরিচালনা করার জন্য বর্তমান সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এর ধারাবাহিকতায় অন্য কোথাও নিরাপদ স্থাপনা না পাওয়ার কারণে সরকার শেষ পর্যন্ত ওই ভবনটিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হিসাবে ব্যবহার করছে’।

‘২০০৯ সালে এ ভবনের একটি অংশ আইন কমিশন এবং অপর অংশে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের অফিস হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। সে সময় ভবনের রক্ষণাবেক্ষণ সঠিকভাবে হচ্ছিল না। তখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করার জন্যও জায়গা খোঁজা হচ্ছিল। নিরাপত্তার দিকটি বিবেচনায় এনে এ ভবনটি সবচেয়ে নিরাপদ বিবেচিত হওয়ায় এখানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করা হয়’।
 
‘ভবনটিতে ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করার পর প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ করা হয় এবং আইন কমিশন ও জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের অফিস ১৫, কলেজ রোডে স্থানান্তর করা হয়। সে সময় থেকে এখানে বিচার কাজ শুরু হয় এবং অনেক কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীর বিচার কাজ সুসম্পন্ন হয়। সে কারণে এ ভবনটির ঐতিহ্য আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ চায়, এই ভবনটি ঐতিহাসিক ভবন বিধায় সে মর্যাদাকে সমুন্নত রেখে ভবনটিকে সংরক্ষণ করা হোক এবং আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল এখান থেকে সরানো না হোক। এটা সরানো হলে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হবে এবং দেশের সঠিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতার ক্ষেত্রে তা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করবে’।

‘তাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ বন্ধ করে পুরনো হাইকোর্ট ভবনটির দখল সুপ্রিম কোর্টের অনুকূলে হস্তান্তর করা হলে তা বর্তমান প্রেক্ষাপটে সর্বজনগ্রাহ্য হবে না বরং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দেশবাসীর কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হবেন’।

‘ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল স্থানান্তর করে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অনুকূলে পুরাতন হাইকোর্ট ভবনের দখল হস্তান্তর করার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য আপনাকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল’।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৬
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।