ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু’ রায়ের রিভিউ আবেদন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০১৭
‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু’ রায়ের রিভিউ আবেদন সুপ্রিম কোর্ট

ঢাকা: ‘যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে আমৃত্যু কারাবাস’ বলে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেওয়া সাভারের জামান হত্যা মামলার আপিলের রায়ের পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।

রোববার (০৫ নভেম্বর) আবেদনকারী আতাউর রহমান মৃধার আইনজীবী শিশির মনির এ তথ্য জানান। এ মামলায় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে থাকবেন খন্দকার মাহবুব হোসেন।

 
 
২০০১ সালে গুলি করে জামানকে হত্যার দায়ে ২০০৩ সালে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। হাইকোর্টে আপিলের পর বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল থাকে। আপিলের পর গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আসামিদের মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন সর্বোচ্চ আদালত।

রায় ঘোষণার সময় আপিল বিভাগ ‘যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে আমৃত্যু কারাবাস’ এমন মন্তব্য করেন বলে জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।

তবে ওইদিন অন্যান্য মামলার আসামির ক্ষেত্রে এ সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য হবে কি-না সে বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছিলেন, ‘সকলের ক্ষেত্রে এ রায় প্রযোজ্য হবে কি-না, সেটি পূর্ণাঙ্গ রায় না হওয়া পর্যন্ত বলা যাবে না’।
 
একইদিন খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘রায়ের সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু (ন্যাচারাল লাইফ) কারাবাস। তখন আমি এর প্রতিবাদ করেছি’।
 
‘আমি বলেছি, দণ্ডবিধির ৫৭ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের অর্থ ৩০ বছর। আসামিরা কারাগারে রেয়াত পেলে এ দণ্ড আরও কমে আসে। যদি আমৃত্যুই হয়ে থাকে, তাহলে তাদের রেয়াতের কি হবে? আমি আরও বলেছি, প্রধান বিচারপতির এ মন্তব্য যেন মূল রায়ে না থাকে’।
 
‘তবে যদি থাকে, তাহলে সব আসামির ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে’।
 
ওইদিন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘আদেশে সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন, যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছর নয়, আমৃত্যু কারাদণ্ড। তখন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন, যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছর’।
 
তবে গত ২৪ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ৯২ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে আপিল বিভাগ বলেন, ‘দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুসারে দোষী ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবেন- এটিই বিধান। এক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডটি হচ্ছে ব্যতিক্রম। যখন এ ধরনের পরিস্থিতিতে কাউকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়, তখন এর কারণ অবশ্যই উল্লেখ করতে হয়’।
 
‘দণ্ডবিধির ৫৩ ধারা অনুসারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের অর্থ ৪৫ ধারার সঙ্গে মিলিয়ে পড়তে হবে। সেক্ষেত্রে দেখা যায়, যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাদণ্ড’।
 
আদালত আরও বলেন, ‘যদি হাইকোর্ট বিভাগ বা এই আদালত (আপিল বিভাগ) মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করেন তখন এবং নির্দেশ দেন যে, তার স্বাভাবিক মৃত্যু পর্যন্ত এ কারাদণ্ড ভোগ করবেন, তখন এ ধরনের মামলায় সাজা কমানোর আবেদন গ্রাহ্য হবে না’।
 
আদালতের এ রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত অন্যান্য আসামির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রসচিব ও কারা মহাপরিদর্শককে (আইজি প্রিজন) বলা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।