এ বিষয়ে দেশের সব জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অবহিত করতে স্বরাষ্ট্র সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
একই সঙ্গে সারা দেশের মাদকের অনুপ্রবেশ বিশেষত ইয়াবা ও ফেনসিডিল নিরোধকল্পে ব্যবস্থা গ্রহণে তথ্যানুসন্ধান ও ব্যবস্থা গ্রহণে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সোমবার (২৯ জানুয়ারি) এ আদেশ দেন।
সোমবার একটি জাতীয় দৈনিকে ‘মাদক মানে বিষ—৭: ইয়াবার গ্রামে কোটিপতি বাসিন্দা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন নজরে নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ এ আদেশ দেন।
রুলে ইয়াবা ও অপরাপর মাদকদ্রব্য অবাধে প্রবেশ, পরিবহন ও অবৈধভাবে বাজারজাতকরণ রোধে বিবাদীদের ব্যর্থতায় কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক, পিবিআইয়ের প্রধান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার, টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ইউএনওকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া একমাস পর পিবিআইকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ১ মার্চ দিনও নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ইয়াবা ব্যবসার মূল কেন্দ্র কক্সবাজারের টেকনাফ। এখান থেকেই সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয় সর্বনাশা এ মাদক। ব্যবসাটা চলে এভাবে- ঢাকা থেকে মোবাইল ফোনে মেসেজ পাঠানো হয় টেকনাফের বিশেষ একজনকে। জানাতে হয় কী পরিমাণ ইয়াবা লাগবে, কোথায় পাঠাতে হবে। ইয়াবা চলে যায় সেই ঠিকানায়। আর টাকা পাঠানোও এখন তো অনেক সহজ। ব্যাংক হিসাব তো আছেই, মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তা এখন আরও সহজ। দ্রুত টাকা চলে যায় সেখানে। আর এভাবেই টেকনাফ থেকে প্রতিনিয়ত ইয়াবার চালান ছড়িয়ে পড়ছে ঢাকাসহ সারা দেশে।
আর্থিক, সামাজিক, মানবিক—নানাভাবে মাদক ইয়াবার আগ্রাসন দেশজুড়ে। বছরে এই বড়ি বিক্রি হচ্ছে ৪০ কোটির মতো, যার বাজার মূল্য প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা (প্রতিটি দেড়শ’ টাকা দাম হিসেবে)। এই টাকার অর্ধেকই চলে যাচ্ছে ইয়াবার উৎসভূমি মিয়ানমারে। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা পাচার শুরু হয় ২০০৬ সাল থেকে।
কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের ঠিক ওপারেই মিয়ানমারের অবস্থানের কারণে এই স্থানটিই ইয়াবা আসার প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। ফলে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকাজুড়েই চলছে ইয়াবার জমজমাট ব্যবসা। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে এর মূল ব্যবসায়ীরাও থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৮
ইএস/জেডএস