ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মাদ্রাসায় জাতীয় সঙ্গীতের প্রতিযোগিতা নিয়ে রিট খারিজ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৮
মাদ্রাসায় জাতীয় সঙ্গীতের প্রতিযোগিতা নিয়ে রিট খারিজ

ঢাকা: জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন প্রতিযোগিতায় স্কুল-কলেজের সাথে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে নির্দেশনামূলক সার্কুলারের বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিট ‘উত্থাপিত হয়নি’ মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রিটের শুনানি শেষে মঙ্গলবার (২৭ মার্চ) বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

পরে তৈমুর আলম খন্দকার জানান, ১৮ জানুয়ারি সরকার একটি সার্কুলার জারি করে। এতে বলা হয়, শুদ্ধভাবে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীত চর্চাকে অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যে সরকার দেশব্যাপী প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে দলগত জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন প্রতিযোগিতা আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

ওই সার্কুলারে আরও বলা হয়, প্রতিযোগিতা তিনটি স্তুরে যথাঃ স্কুল, কলেজ, ও মাদ্রাসায় প্রাথমিক স্তরে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি; মাধ্যমিক স্তরে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হবে।

এই সার্কুলারের মাদ্রাসার অংশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন কুড়িগ্রাম রাজারহাটের ছাকিরপাড়া তালুক গ্রামের লোপাজ উদ্দিন ব্যাপারির ছেলে ও সুখদেব ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মো. নুরুল ইসলাম মিয়া ও ঢাকার পূর্ব কদমতলীর মেরাজনগরের বাসিন্দা আদেল উদ্দিন শেখের ছেলে মনির হোসেন স্বাধীন শেখ।

আবেদনকারীদের দাবি, ১৯৭৮ সালের বিধান অনুসারে কেবল স্কুলেই দিনের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হবে, মাদ্রাসায় নয়। মাদ্রাসা শরিয়ত মোতাবেক চলে। এখানে কোনো প্রকার সঙ্গীতের প্রতিযোগিতা অনুমোদন করে না।

রিটের শুনানিতে আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকারকে উদ্দেশ্য করে আদালত বলেন, ‘আপনি দেখান পবিত্র কোরানের কোথায় আছে, জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া যাবে না? পবিত্র কোরানের কোথাও নেই যে, জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া যাবে না। আগে তো মাদ্রাসার সিলেবাসে অংক, ইংরেজি, বিজ্ঞান বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল না। যুগের চাহিদা অনুযায়ী সে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্রকারান্তরে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করার জন্যই এ রিট করা হয়েছে। ’

আদালত আরও বলেন, ‘স্কুলের শিক্ষার্থীরা জাতীয় সঙ্গীত গাইবে, আর মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা গাইবে না, এটা তো হতে পারে না। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা দেশের বাইরে গেলে যখন বিদেশিরা জাতীয় সংগীতের বিষয় জানতে চাইবে, তখন শিক্ষার্থীরা কী জবাব দেবে? ব্রিটিশ আমলে আমরা ইংরেজি না শিখে পিছিয়ে পড়েছিলাম। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের পিছিয়ে দিতে এ ধরনের রিট করা হয়েছে। ’ 

এরপর আদালত তার এক আদেশে রিটটি ‘উত্থাপিত হয়নি’ মর্মে খারিজ করে আদেশ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৮
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।