ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

৯৯ কোটি ২১ লাখ টাকার চেক সংশোধনের নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৭ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৯
৯৯ কোটি ২১ লাখ টাকার চেক সংশোধনের নির্দেশ

ঢাকা: ঢাকার ওয়াইজঘাটে মুন সিনেমা হলের জমি ও স্থাপনার মূল্য হিসেবে ৯৯ কোটি ২১ লাখ টাকার চেক ব্যক্তি মাকসুদুল আলমের পরিবর্তে বাংলাদেশ ইটালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস লিমিটেডের নামে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

রোববার (৩০ জুন) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগ অর্থ মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে এ নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে আদালত আগামী ২১ জুলাই (রোববার) পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। মুন সিনেমা হলের পক্ষে ছিলেন তৌফিক নেওয়াজ। সঙ্গে ছিলেন  অ্যাডভোকেট সাইফুল্লাহ মামুন।

গত বছরের ১০ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ ৩০ জুনের মধ্যে টাকা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিলেন।  

এ আদেশ অনুসারে সরকার মুন সিনেমা হলের মালিক মাকসুদুল আলমের নামে ৯৯ কোটি ২১ লাখ ৭৩ হাজার ৭৪ টাকা ২৭ পয়সার চেক ইস্যু করে রোববার তা আদালতে উপস্থাপন করে।

এ সময় বাংলাদেশ ইটালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস লিমিটেডের আইনজীবী তৌফিক নেওয়াজ আপত্তি জানিয়ে আদালতে বলেন, ব্যক্তির নামে নয়, চেক হতে হবে কোম্পানির নামে। এরপর আদালত তা সংশোধন করে কোম্পানির নামে করতে নির্দেশ দেন।

ইতালিয়ান মার্বেলস ওয়ার্কস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল আলম ছিলেন মুন সিনেমা হলের মালিক। মুক্তিযুদ্ধের সময় সম্পত্তিটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে মালিকানা দাবি করে মাকসুদুল আলম আদালতের দ্বারস্থ হন। হাইকোর্টে রায় পক্ষে যাওয়ার পর আপিল বিভাগ ২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে তা বহাল রাখেন। একইসঙ্গে ৯০ দিনের মধ্যে মুন সিনেমা হল বাংলাদেশ ইতালিয়ান মার্বেলস ওয়ার্কস লিমিটেডকে ফেরত দেওয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দেন।

পঞ্চম সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ে ৯০ দিনের মধ্যে পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাট এলাকার মুন সিনেমা হল মূল মালিককে ফেরতের নির্দেশ দেন। কিন্তু ইতালিয়ান মার্বেলস ওয়ার্কস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মুন সিনেমা হলের মালিক মাকসুদুল আলম তার জমি না পেয়ে ২০১২ সালে আপিল বিভাগে আবেদন করেন।  

পরে রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, মুন সিনেমা হল আগের অবস্থায় ফেরত দেওয়ার কোনো উপায় নেই। এখন মুন সিনেমা হলের জমির মূল্য ও মুন সিনেমা হলের মূল স্ট্রাকচারের (কাঠামো) মূল্য ধরে এর মালিক ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন। এরপর ২০১৭ সালে আদালত একটি মুন সিনেমা হলের জমি ও স্থাপনার মূল্য নির্ধারণের নির্দেশ দেন।  

সে অনুসারে মূল্য নির্ধারণ করে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। পরে  আপিল বিভাগ ২০১৮ সালের ১৮ জানুয়ারি এক আদেশে ক্ষতিপূরণসহ ভবন ও জমির মূল্য বাবদ ৯৯ কোটি ২১ লাখ ৭৩ হাজার ৭৪ টাকা ২৭ পয়সা পরিশোধ করতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ও এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের প্রতি নির্দেশ দেন। ওই বছরের ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে এ টাকা তিন কিস্তিতে পরিশোধ করতে বলা হয়। আদেশের অনুলিপি পাওয়ার ২ মাসের মধ্যে ২৫ কোটি, এর দুইমাসের মধ্যে আরো ২৫ কোটি এবং বাকি টাকা ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে পরিশোধ করতে বলা হয়। এ অবস্থায় গতবছর ১০ ডিসেম্বর আবারো সময়ের আবেদন করে সরকার। ওইদিন আদালত ৩০ জুনের মধ্যে টাকা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, জুন ৩০,২০১৮
ইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।