ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আসামিদের দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়েন নুসরাতের মা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫১ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৯
আসামিদের দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়েন নুসরাতের মা

ফেনী:  ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বুধবার (১০ জুলাই) আদালতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন তার মা শিরীন আক্তার। 

ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে সাক্ষ্য দেন তিনি। এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাসহ ১৬ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।

 

বেলা ১২টার দিকে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। অসুস্থজনিত কারণে মামলার সাক্ষী শিরীন আক্তারকে এজলাসের পাশে চেয়ারে বসিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ করেন বিচারক।  

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন। এরপর সেখানে থেকে আসার সময় আকস্মিকভাবে অজ্ঞান হয়ে পড়েন নুসরাতের মা শিরীন আক্তার।  

এ সময় তার ছেলে নুসরাতের বড় ভাই মামলার বাদী মাহমুদুল হাসান নোমান ও উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা তাকে দ্রুত আদালত ভবনের নিচে নিয়ে যান।  

পরে বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজুর ব্যক্তিগত গাড়িতে করে তাকে ফেনী ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

আদালতে নুসরাতের মা শিরীন আক্তার বলেন, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা তুলে না নেওয়ায় নুসরাতকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যা মৃত্যু শয্যায় আমাদের বলে গেছে।  

মেয়ে নুসরাত হত্যার বর্ণনা দিতে দিতেই বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। এ সময় আদালতে পিনপতন নীরবতা সৃষ্টি হয়। জেরা শেষ হওয়ার অজ্ঞান হয়ে পড়েন শিরীন আক্তার।  

নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাংলানিউজকে জানান, নুসরাতের মৃত্যুর পর থেকে তার মা শিরীন আক্তার প্রায় সময়ই অসুস্থ থাকেন। আগের মতো সুস্থ নেই তিনি। সাক্ষ্য দেওয়ার পর হত্যাকারীদের চেহারাগুলো দেখে তিনি আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন।  

ফেনী ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, শিরীন আক্তারকে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। তার জ্ঞান ফিরেছে। এখন তিনি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।  

গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।  

১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন নুসরাতের মৃত্যু হয়।

গত ২৭ জুন মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী নুসরাতের বড় ভাই মাহমদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। পরে সাক্ষ্য দিয়েছেন নুসরাতের বান্ধবী নিশাত সুলতানা ও সহপাঠী নাসরিন সুলতানা, মাদ্রাসার পিয়ন নূরুল আমিন, নৈশপ্রহরী মো. মোস্তফা, কেরোসিন বিক্রেতা লোকমান হোসেন লিটন, বোরকা দোকানি জসিম উদ্দিন ও দোকানের কর্মচারী হেলাল উদ্দিন ফরহাদ, পরীক্ষাকেন্দ্রের হল পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন, ফার্মেসির দোকানি জহিরুল ইসলাম।  

এদিকে আদালত পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দিন ঠিক করেছেন। এদিন সাক্ষ্য দেবেন মাদ্রাসার শিক্ষক আবুল খায়ের।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৯ 
এসএইচডি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।