রোববার (২৪ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
যদি এ টাকা পরিশোধ করা না হয়, তাহলে প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা আদায়ের ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে বলেও আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
আদালতে গ্রামীণফোনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এএম আমিন উদ্দিন ও আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তাদের সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরী।
অন্যদিকে বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবে আলম ও আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
আদেশের পর গ্রামীণফোনের আইনজীবী ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরী বলেন, দুই হাজার কোটি টাকা না দিলে তিন মাস পর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয়ে যাবে। আমরা আদেশ পাওয়ার পরে ক্লায়েন্টের (গ্রামীণফোন) সঙ্গে আলাপ করবো রিভিউ করবো কি-না। তিন মাস সময় রয়েছে। আর এক মাসের মধ্যে রিভিউ করার সুযোগ রয়েছে।
বিটিআরসির আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব বলেন, বিটিআরসির যে পাওনা ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা, এর মধ্যে তারা (গ্রামীণফোন) যদি দুই হাজার কোটি টাকা এখন না দেয়, তাহলে হাইকোর্ট থেকে যে নিষেধাজ্ঞা নিয়েছিল, সেটা ভ্যাকেট (প্রত্যাহার) হয়ে যাবে।
‘এর অর্থ হলো, এখন গ্রামীণফোনকে দুই হাজার কোটি টাকা দিতে হবে। তারা যদি না দেয় তাহলে বিটিআরসির যেকোনো অ্যাকশন নিতে আইনগত আর কোনো বাধা থাকবে না। আদেশের অনুলিপি পেলে বিস্তারিত জানা যাবে। এখন হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে যদি তারা দুই হাজার কোটি টাকা দেয়। ’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা তো ফাইনাল সেটেলমেন্ট না। এখন দুই হাজার কোটি টাকা দিলে পরে যদি দেখা যায় মামলায় বিটিআরসি আরও বেশি টাকা পায়, তাহলে দেবে। সুতরাং আমরা আপাতত সন্তুষ্ট। আমরা সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা চেয়েছি। এটা নিয়ে কোর্টে মামলা চলছে। হাইকোর্টেও রয়েছে। ওই মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার পরে জানা যাবে বিটিআরসি আর কত টাকা পাবে কি পাবে না।
এর আগে, গত ১৭ অক্টোবর বিচারপতি একেএম আবদুল হাকিম ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের হাইকোর্ট বেঞ্চ গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসির প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা দাবি আদায়ের ওপর দু’মাসের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেন। পরে, গ্রামীণফোনের কাছে ওই টাকা দাবি আদায়ের ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত চেয়ে বিটিআরসি আপিল বিভাগে আবেদন করে।
এ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে রোববার (২৪ নভেম্বর) দুই হাজার কোটি টাকা দেওয়ার আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
এ ব্যাপারে ১৭ অক্টোবর গ্রামীণফোনের একজন আইনজীবী জানিয়েছিলেন, চলতি বছরের ২ এপ্রিল বিভিন্ন খাতে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা দাবি করে বিটিআরসি গ্রামীণফোনকে চিঠি দিয়েছিল। পরে গ্রামীণফোন ওই চিঠির বিষয়ে নিম্ন আদালতে টাইটেল স্যুট (মামলা) করে। একই সঙ্গে ওই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অর্থ আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হয়। পরে ২৮ আগস্ট নিম্ন আদালত গ্রামীণফোনের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন খারিজ করে দিলে ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে গ্রামীণফোন।
পরে শুনানি শেষে ১৭ অক্টোবর আদালত আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে টাকা আদায়ের ওপর দু’মাসের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৯ (আপডেট: ১০১৫ ঘণ্টা)
ইএস/একে