ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

চাল চুরির মামলা দ্রুত বিচারে স্থানান্তর চেয়ে নোটিশ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২০
চাল চুরির মামলা দ্রুত বিচারে স্থানান্তর চেয়ে নোটিশ

ঢাকা: করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় বরাদ্দ দেওয়া ত্রাণের চাল চুরি করে আত্মসাতের ঘটনায় করা মামলাগুলো দ্রুত বিচার ও শাস্তির জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বদলি চেয়ে সরকারকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

সোমবার (১৩ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এএইচ ইমাম হাসান মেইল যোগে এ নোটিশ পাঠান। খাদ্য সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব, আইন সচিব এবং স্বরাষ্ট্র সচিব বরাবরে এ নোটিশ পাঠানো হয়।

পরে ইমাম হাসান জানান, সরকারের দেওয়া ত্রাণ সারাদেশে কিছু অসৎ ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও চেয়ারম্যানসহ কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত অনেকেই সেগুলো আত্মসাৎ করেছেন এবং প্রতিনিয়ত করছেন। এ অবস্থায় করোনার বিশেষ পরিস্থিতির ত্রাণ চুরির অভিযোগে দায়ের করা সব মামলা বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বদলি করে দ্রুত বিচার ও শাস্তি নিশ্চিতের প্রদক্ষপ গ্রহণ করার জন্য লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছি। এসব মামলায় যদি কোনো আসামি দণ্ডিত হয় এবং আপিলে দণ্ড বহাল থাকে, তাহলে সেই দণ্ডিত আসামির তালিকা তৈরি করে জনসম্মুখে প্রকাশ করার কথাও নোটিশে বলেছি। নোটিশ প্রাপ্তির সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।

এছাড়া প্রত্যেক জেলায় ‘জেলা অনুসন্ধান কমিটি’ গঠন করে কী পরিমাণ ত্রাণ সরকার কর্তৃক বরাদ্ধ হয়েছে এবং কী পরিমাণ বিতরণ হয়েছে এবং কী কী অনিয়ম হয়েছে, তার প্রতিবেদন তৈরির জন্য বলা হয়েছে এবং বিশেষ এই পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে দেওয়ার জন্য প্রদক্ষপ গ্রহণের জন্য নোটিশে উল্লেখ করেছি।

করোনা ভাইরাসের সময়ে মানবিক সহায়তা হিসেবে ত্রাণ বিতরণে অনিয়মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর বার্তার মধ্যেই একজন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও দুই সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

এরইমধ্যে ত্রাণ বিতরণে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে ১২ এপ্রিল তিনটি পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান।

চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার ৩ নম্বর মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুল আফসারের বিরুদ্ধে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বরাদ্দ ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।

নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার সুকাশ ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শাহিন শাহ করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষের জন্য সরকারের বরাদ্দ করা ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিতরণ না করে অন্যত্র বিক্রির অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে ধরা খেয়ে জেলে রয়েছেন।

এছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. কবির হোসেনের বিরুদ্ধে করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় সরকারের ত্রাণ বিতরণ না করে আত্মসাৎ এবং গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

চেয়ারম্যান ও দুই সদস্যের সংঘটিত অপরাধমূলক কার্যক্রম জনস্বার্থ পরিপন্থি বিবেচনায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪(১) ধারা অনুযায়ী তাদের স্বীয় পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২০
ইএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।