ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বাঁশখালীর ঘটনায় আদালত অবমাননার নোটিশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৮ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২১
বাঁশখালীর ঘটনায় আদালত অবমাননার নোটিশ

ঢাকা: চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনার প্রেক্ষাপটের ধারাবাহিকতায় আদালত অবমাননার নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও একজন এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে গত ২৭ মে থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানরি অভযিোগ এনে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবি সমিতি (বেলা) সহ ছয়টি সংগঠন মঙ্গলবার (৩০ জুন) এ নোটিশ দেয়।

পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ০৪ মে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ, অন্যান্য অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের সাথে সাথে কর্মরত শ্রমিক ও মৃত এবং আহতসহ শ্রমিক পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং কোনো শ্রমিক বা উল্লেখিত এলাকার কোনো জনসাধারণকে যেন হয়রানি না করা হয় তা নিশ্চিত করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেন।

‘আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও একজন এলাকাবাসী ইঞ্জিনিয়ার শাহনেওয়াজ চৌধুরীর বিরুদ্ধে গত ২৭ মে এস আলম গ্রুপের পক্ষে চিফ কো-অর্ডিনেটর থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানি করা হচ্ছে, যা স্পষ্টত আদালতের নির্দেশ অবমাননার শামিল। ’

‘এ অবস্থায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা), এএলআরডি, ব্লাস্ট, নিজেরা করি, সেফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি ও আসক বাঁশখালীর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও এস আলম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বরাবরে আদালত অবমাননার নোটিশ দেয়। ’

নোটিশে গত ২৭ মে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হয়েছে। একইসাথে আদালতের নির্দেশ যথাযথ প্রতিপালনের স্বার্থে পুনরায় শ্রমিক ও এলাকাবাসীকে মামলা দায়ের করে বা অন্য কোনোভাবে হয়রানি করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানানো হয়ছে।

এর আগে ওই ছয়টি সংগঠনের রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বাঁশখালীর ঘটনায় জেলা প্রশাসন এবং পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন তলব করেছেন হাইকোর্ট। ৪৫ দিনের মধ্যে এ রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এছাড়া আপাতত নিহত শ্রমিকদের ৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে এস আলমের আইনজীবী জানিয়েছেন তিন লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।

রুলে এ ঘটনার তদন্তে বিচারিক অসুন্ধান কমিটি কেন গঠন করা হবে না এবং নিহত শ্রমিকদের পরিবার প্রতি ৩ কোটি এবং আহতদের পরিবার প্রতি ২ কোটি টাকা করে কেন ক্ষতিপূরণ প্রদান নয়, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও সৈয়দা নাসরিন। এস আলমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আরশাদুর রউফ।

এর আগে আইন ও সালিস কেন্দ্রসহ মোট ৬টি সংগঠন এ দুটি রিট দায়ের করে। বাকি ৫টি সংগঠন হলো—বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), নিজেরা করি, সেফটি অ্যান্ড রাইটস এবং অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রির্ফম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি)।

এর আগে গত ১৮ এপ্রিল এ বিষয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন একটি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন।

গত ১৭ এপ্রিল সকালে বাঁশখালীর গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়। আহত হয় অনেক শ্রমিক। এ ঘটনায় বাঁশখালী থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।

নিহতরা হলেন—শুভ (২৩), রাহাত (২৪), আহমদ রেজা (১৯), রনি হোসেন (২২) ও রায়হান (২০)।

পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ এপ্রিল মো. শিমুল (২৩) নামের আহত এক শ্রমিক মারা যান।

বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল কবীর বাংলানিউজকে বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমন্বয়ক ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে। পুলিশের মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় দুই থেকে আড়াই হাজার জনকে এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমন্বয়কের করা মামলায় ২২ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২১
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।