ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মানবাধিকার কমিশনকে লিগ্যাল নোটিশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২১
মানবাধিকার কমিশনকে লিগ্যাল নোটিশ

ঢাকা: ২০১৩ সালে মিরপুরের নির্যাতিত গৃহকর্মী খাদিজাকে ৫০ হাজার টাকা দিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় আইনি ও অবমাননার নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সচিবের কাছে ১৫ দিনের সময় দিয়ে এটি বাস্তবায়নে বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের আইনজীবী মো. আব্দুল হালিম।

২০১৩ সালের ৮ ডিসেম্বর মিরপুরে শিশু গৃহকর্মী খাদিজাকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এরপর গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে আবেদন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে আবেদন করে চিলড্রেন চ্যারিটি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (সিসিবি)। কিন্তু কোনো প্রতিকার না পেয়ে ২০১৮ সালের ২২ ডিসেম্বর সংগঠনটির পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানির পর হাইকোর্ট ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর রায় দেন। গত বছরের জুনে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায় পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে খাদিজার ওপর নির্যাতনের বিষয়ে শুনানি করে প্রতিকার দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।  

এ রায় প্রকাশের পর শুনানি করে ২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ফুলবেঞ্চে সুপারিশসহ রায় ঘোষণো করেন।

রায়ের সুপারিশগুলো-

ক. জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইনানুসারে যে বা যারা গৃহকর্মী খাদিজা নির্যাতনের ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে খাদিজার বিচার পাওয়ার অধিকারকে ক্ষুণ্ন করে মানবাধিকারের লংঘন করেছেন সেসব দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবরে সুপারিশ করা হলো।  

খ. কমিশনের কাছে ভিকটিম খাদিজা বক্তব্য দেওয়ার সময় ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বিচার চেয়েছে। ঘটনার সময় ভিকটিম খাদিজা মা হারা একজন অনাথ শিশু হিসেবে যে নির্যাতনের শিকার হয়েছে এখনও নির্যাতনের সেই ক্ষত তার মনে দাগ কেটে আছে। এ অবস্থায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইনানুসারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ভিকটিম খাদিজার কাছে ৫০ হাজার টাকা পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও মাধ্যমে সাময়িক সাহায্য মঞ্জুর করার ব্যবস্থা নেবেন মর্মে সুপারিশ করা হলো।  

গ. স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এসব সুপারিশকৃত বিষয়ে গৃহীত ব্যবস্থা আগামী তিন মাসের মধ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে অবহিত করবেন।

রায় ঘোষণার পর ওই সময়ে মানবাধিকার কমিশন জানায়, ২০২০ সালের ২৪ জুন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে গৃহকর্মী খাদিজা নির্যাতন ঘটনায় হাইকোর্ট বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের বিষয়টি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অবহিত হয়।

উল্লেখ্য ঘটনাটি গত ২০১৩ সালের ৮ ডিসেম্বরের। কমিশন পূর্ণাঙ্গ রায়ের সার্টিফাইড কপির জন্য অপেক্ষা করে ১৭ জুলাই হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের সার্টিফাইড কপি পান। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসরণে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ফুলবেঞ্চে দুই দফা শুনানি শেষে ২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সুপারিশসহ রায় ঘোষণা করেন।  

আইনজীবী আব্দুল হালিম বলেন,আদালতের রায় এবং কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি। তাই ১৫ দিনের মধ্যে নোটিশে বাস্তবায়নের অগ্রগতি চেয়েছি। অন্যথায় হাইকোর্টে আদালত অবমাননার আবেদন এবং ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন করা হবে।

সেই গৃহকর্মী খাদিজাকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার সুপারিশ


বাংলাদেশ সময়: ১৯০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০২১
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।