ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ফেসবুক লাইভে এসে স্ত্রীকে খুন, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২১
ফেসবুক লাইভে এসে স্ত্রীকে খুন, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড আসামি টুটুলকে আদালতে আনা হয়েছে। ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: ফেনীতে ফেসবুক লাইভে এসে তাহমিনা আক্তার নামে এক গৃহবধূকে হত্যার দায়ে স্বামী ওবায়দুল হক টুটুলকে ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া আসামি টুটুলকে ৫০ হাজার হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় ফেনী জেলা ও দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছা এ রায় ঘোষণা করেন। মাত্র ৬০ কার্যদিবসে এ হত্যার বিচার হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফেনী জজ কোর্টের পিপি হাফেজ আহম্মদ বলেন, সব তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে খুনের অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।

মৃত তাহমিনার বাবা সাহাব উদ্দিন বলেন, ন্যায়বিচার পেয়েছি। বিচার এবং সরকারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।

রায়ের বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু বলেন, অল্প সময়ে মামলাটির বিচার কাজ শেষ হয়েছে। এ রায়ের মধ্য দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে। আমরা সুবিচার পেয়েছি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুস সাত্তার বলেন, আমরা সুবিচার পায়নি। সুবিচারের জন্য উচ্চ আদালতে আমরা আপিল করবো।

আদালত সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) তাহমিনা হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে টুটুলের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন পাবলিক প্রসিকিউটর হাফেজ আহম্মদ ও বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু। আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলার আইনজীবী শাহজাহান সাজু তাহমিনা হত্যা মামলাও নিজ খরচে পরিচালনা করেন। আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন আইনজীবী আবদুস সাত্তার।

চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি মামলার বাদী নিহতের বাবা সাহাব উদ্দিনের সাক্ষ্যগ্রহণের শুরু হয়। এই মামলায় ১৭ জনেরে ১৩ জনের সাক্ষ্য দেন। ২০ জানুয়ারি থেকে বিচার কার্য শুরু হয়। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর একমাত্র আসামি ওবায়দুল হক টুটুলকে অভিযুক্ত করে চার্জগঠন করা হয়।  

এর আগে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ইমরান হোসেন গত ১১ নভেম্বর টুটুলকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল স্ত্রী তাহমিনাকে কুপিয়ে হত্যা করেন টুটুল। এ ঘটনায় সাহাব উদ্দিন বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

পরিবার সূত্র জানায়, প্রায় ৫ বছর আগে ফেনী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড বারাহিপুর এলাকার গোলাম মাওলা ভূঁঞার ছেলে টুটুল কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আকদিয়া গ্রামের সাহাব উদ্দিনের মেয়ে তাহমিনাকে বিয়ে করেন। তাদের তাফান্নুন আরোয়া মায়োস নামে দেড় বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। স্ত্রীকে হত্যার আগে ফেসবুক লাইভে এসে টুটুল সবার কাছে মাফ চান এবং ঘটনার জন্য নিজেই দায়ী বলে স্বীকার করেন।

এছাড়া পারিবারিক অশান্তির জন্য স্ত্রীকে দায়ী করেন। তার স্ত্রী পরিবারকে ‘ব্ল্যাকমেল’ করতেন বলেও দাবি করেন। তিনি ভিডিওতে তার মেয়েকে দেখভালের জন্য সবার কাছে অনুরোধ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২১
এসএইচডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।