ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

১৯৭৫ সালে বিটিভির ৪ কর্মকর্তা খুনের মামলা চলবে: হাইকোর্ট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২২
১৯৭৫ সালে বিটিভির ৪ কর্মকর্তা খুনের মামলা চলবে: হাইকোর্ট

ঢাকা: দাবিদাওয়া নিয়ে বিটিভির তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী কল্যাণ সমিতির আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ৪ কর্মকর্তা হত্যা মামলা বাতিল প্রশ্নে রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে আগের দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেছেন হাইকোর্ট।

ফলে নিম্ন আদালতে মামলা চলবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

বুধবার (৩১ আগস্ট) এ রায় দেন বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের বেঞ্চ।

দীর্ঘ দিন এ মামলার ওপর স্থগিতাদেশ থাকায় সম্প্রতি এ মামলা সচলের উদ্যোগ নেয় রাষ্ট্রপক্ষ।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে রয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম রাবেয়া মিতি।

পরে অ্যাটর্নি জেনারেল জানান,আজকে সেই স্থগিতাদেশ জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে এখন মামলাটি চলবে।

ওই চার কর্মকর্তা হলেন— টেলিভিশন সম্প্রচার কেন্দ্রের অন্যতম স্থপতি, পাক্ষিক বিচিত্রার সম্পাদক, বিটিভির তৎকালীন উপমহাপরিচালক মনিরুল আলম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা এ বি সিদ্দিক, প্রধান হিসাবরক্ষক আকমল খান ও চিত্রগ্রাহক ফিরোজ কাইয়ুম চৌধুরী।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর রেডিও ও টিভি স্টেশনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। ওই সময় দাবিদাওয়া নিয়ে বিটিভির তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী কল্যাণ সমিতির আন্দোলন চলছিল। কিন্তু বিটিভির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কর্মচারীদের দাবি মানতে রাজি ছিল না।

৭ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে বিটিভির সব আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। কর্মকর্তাদের বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় টিভি ভবনের পিছনে ঝিলপাড়ে। সেখানে আসামিরা তাদের গুলি করে এবং বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে হাতিরঝিলের পানিতে লাশ ফেলে দেয়।

খোঁজ না পেয়ে ১৯৭৫ সালের ১৯ নভেম্বর তাদের স্ত্রীরা গুলশান থানায় চারটি অপহরণ মামলা করেন। হাতিরঝিলের পানি শুকিয়ে গেলে ১৯৭৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তিনটি কংকাল পাওয়া যায়। সেগুলো ঠেলাগাড়িতে করে গুলশান থানায় নিয়ে যাওয়ার পর সেখান থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে। পরীক্ষার পর কংকালগুলো ৩ জনের বলে চিহ্নিত করা হয়। বাকি একজনের হদিস পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে গোয়েন্দা পুলিশ ১৯৭৮ সালের ৯ জানুয়ারি আসামিদের সম্পৃক্ততা নেই বলে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।  

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে আকমলের স্ত্রী মনোয়ারা আকমল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন করেন। সেই অনুযায়ী সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৭ সালের ২৫ মার্চ আদালত আবেদনটি গ্রহণ করলে মামলার কার্যক্রম আবার শুরু হয়।

দীর্ঘ তদন্তের পর মামলার প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা মো. ফজলুল করিম খান ১৯৯৯ সালের ১৮ আগস্ট ৯ আসামিকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পুলিশ তাদের গ্রেফতারও করে। পরে তারা জামিনে মুক্ত হন।

২০০২ সালের ৭ আগস্ট মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে আসে। পরের বছর ১৬ আগস্ট নয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

পরে এক আসামি আলতাফ হোসেন হাইকোর্টে মামলা বাতিলে আবেদন করেন। আদালত প্রথমে রুল পরে স্থগিতাদেশ দেন। যেটি বুধবার খারিজ হয়ে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২২
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।