ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

পটল মিষ্টি বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিলেন জরিফ শেখ

মোমেনুর রশিদ সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১১ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০২৩
পটল মিষ্টি বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিলেন জরিফ শেখ

গাইবান্ধা: মিষ্টি পছন্দ করেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। পছন্দের এ তালিকায় বড়দের চেয়ে এগিয়ে ছোটরা।

 

বিশেষ করে শিশুরা মিষ্টি ছাড়া অন্য স্বাদের খাবার খেতেই চায় না। শাক-সবজির ধারে কাছেও যেতে চায় না অনেকে। সে কারণে শিশুদের পুষ্টির ঘাটতি নিয়ে চিন্তায় থাকেন অভিভাবকরা।

তাদেরই একজন জরিফ শেখ। তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত মিষ্টি ব্যবসায়ী। সবার মতো তার পরিবারের শিশুরাও মিষ্টি ছাড়া কিছু খেতে চায় না। তাই মিষ্টির মধ্য দিয়ে কি করে তাদের পুষ্টিকর শাক-সবজি খাওয়ানো যায়, এমন চিন্তা থেকেই জরিফ আবিষ্কার করে ফেলেছেন পটল মিষ্টি।

বুধবার (৭ জুন) দুপুরে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার শেখ দই ঘরের স্বত্বাধিকারী জরিফ শেখ বলেন, যে স্বপ্ন থেকে পটল মিষ্টি তৈরি করেছি, সে প্রত্যাশা অনেকটা সফল হয়েছে। প্রথমে বানানোর পর বাড়ির লোকজনকে খাইয়েছি। তাতে শিশুসহ সবার প্রশংসা পেয়েছি। পরে দোকানে বিক্রি শুরু করেছি।
 
এরপর যা ঘটেছে, তাতে রীতিমতো অবাক জরিফ শেখ। বিষয়টি ভাইরাল হওয়ায় নিজ জেলা তো বটেই, প্রতিদিন পাশের জেলা থেকেও লোকজন আসছেন পটল মিষ্টির স্বাদ নিতে। পটল মিষ্টির অর্ডার আসছে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকেও।

বর্তমানে উপজেলার তিনটি শো-রুম থেকে প্রতিপিস পটল মিষ্টি ৪০ টাকা এবং প্রতি কেজি ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ মিষ্টি তৈরিতে বেশ সময় লাগায় ক্রেতাদের চাহিদার জোগান দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।  

শেখ দই ঘরের পটল মিষ্টি তৈরির কারিগর আনোয়ার হোসেন জানান, এ মিষ্টি বানানোর জন্য দুই ধাপে কাজ করতে হয়। প্রথমে নিখুঁত পটল বাছাই করে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। তবে ক্ষেত থেকে পটল তুলে যত দ্রুত ব্যবহার করা যায়, তত ভালো। খোসা ছাড়ানো পটলের একপাশ কেটে ভেতরের বিচি বের করে ফেলতে হবে। এরপর পুরো পটলের শরীর কাটা চামচ দিয়ে ছিদ্র করে চুলায় গরম পানিতে সিদ্ধ করতে হবে। এবার সিদ্ধ পটলগুলো চিনির সিরায় জ্বাল দিতে হবে। প্রয়োজনীয় জ্বাল হয়ে গেলে সিরা থেকে পটল তুলে রাখতে হবে।

দ্বিতীয় ধাপে পটল মিষ্টির ভেতরের উপকরণ তৈরির পালা। এর মূল উপাদান দুধের ছানা। এতে ভাজা মাওয়া, কাজু বাদাম, পেস্তা বাদাম, কাঠ বাদাম, কিশমিশ ও খাঁটি ঘি যোগ করা হয়।

সবশেষে তৈরি উপকরণটি সিরা থেকে তুলে রাখা পটলের ভেতরে গুঁজে দিলেই তৈরি হয়ে যাবে দারুণ স্বাদ ও পুষ্টির পটল মিষ্টি।  

পটল মিষ্টির স্বাদ নিতে আসা গাইবান্ধা রেডিও সারাবেলার আরজে আরমান বলেন, বন্ধুদের কাছে শুনে পটল মিষ্টি খেতে এসেছি। এর স্বাদ সত্যিই চমৎকার। প্রাকৃতিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি সবজি ব্যবহার করাটা মিষ্টিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

গাইবান্ধা এসকেএস প্রিন্টারের ম্যানেজার তাওহীদ বলেন, সবার মতো গল্প শুনেই মূলত পটল মিষ্টির স্বাদ নিতে আসা। এক কথায় বলতে গেল এটা অসাধারণ এবং একেবারেই ভিন্ন এর স্বাদ। যেহেতু দেশে পটল সহজলভ্য, তাই স্বাদ ও ব্যবসার কথা চিন্তা করে এটাকে সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৯ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।