ঢাকা: ধ্রুপদী সঙ্গীতশিল্পী ইলা মজুমদার আর বেঁচে নেই। তিনি প্রয়াত সঙ্গীতজ্ঞ বারীণ মজুমদারের স্ত্রী ও জনপ্রিয় গায়ক বাপ্পা মজুমদারের মা ।
ইলা মজুমদার দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস ও বার্ধ্যক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগে ৩ মে মঙ্গলবার (সোমবার দিবাগত) রাত ৩টায় তার জীবনাবসান হয়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে বারডেম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ইলা মজুমদার তিন সন্তান আর অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
ইলা মজুমদার ১৯৪১ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন। শিল্প-সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী থেকে তিনি গুণীজন সম্মাননায় ভূষিত হন। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৫৮ সালে পেয়েছিলেন স্বর্ণপদক। রত্নগর্ভা জননীর স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ধ্রুপদী শিল্পী ইলা মজুমদার সঙ্গীতচর্চা ছাড়াও দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন।
রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে ১৯৮১ সাল থেকে টানা প্রায় ২২ বছর শিক্ষকতা করেন তিনি। জাতীয় সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে তিনি খন্ডকালীন শিক্ষকতা করেছেন প্রায় ১৫ বছর। গান ও শিক্ষকতার পাশাপাশি ইলা মজুমদার লেখালেখিও করতেন নিয়মিত। দেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সঙ্গীত ও স্মৃতিচারণমূলক তার অনেক লেখা প্রকাশিত হয়। তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে সঙ্গীতের তত্ত্বকথা, দিনগুলি মোর, স্মৃতিতে শ্রুতিতে বারীণ মজুমদার।
ইলা মজুমদারের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ দুপরে কেন্দ্রীয় শহীদমিনারে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে শেষবার এক নজর দেখতে সংস্কৃতিকর্মী ও গুণগ্রাহীরা ভিড় জমান। তাদের মধ্যে ছিলেন রামেন্দু মজুমদার, আলী যাকের, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, শিমুল ইউসুফ, লিয়াকত আলী লাকী, ম হামিদ, আসাদুজ্জামান নূর, শংকর সাঁওজাল, মাহমুদুজ্জামান বাবু, মিলা, কণা ও আরো অনেকে। উদীচী, ছায়ানট, শিল্পকলা একাডেমীসহ বিভিন্ন সংগঠন ইলা মজুমদারের মরদেহর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুস্পস্তবক অর্পণ করে।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে ইলা মজুমদারের মরদেহ রাজধানীর সবুজবাগের মহাশ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার মরদেহের দাহ ও শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
বাংলাদেশ সময় ১৬২৯ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১১