ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

অপরূপা মাধবপুর লেক

তমাল ফেরদৌস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০১০

লেকের ভেতর ঝলমলে পানি, পানির ওপর নীলপদ্ম। ছায়া সুনিবিড় পরিবেশ।

শাপলা-শালুকের ভেতর হাঁসের খেলা। দশটি বাঁক নিয়ে এঁকেবেঁকে পাহাড়ের ভেতর তার চলা। চারদিকে সবুজ পাহাড়। উঁচু-নিচু টিলার সমাহার। জায়গায় জায়গায় ঢেউখেলা চা বাগানে সারি সারি বিভিন্ন গাছ। পাহাড়ি গাছের ফাঁক দিয়ে চুঁইয়ে আসা সূর্যকিরণ। হাঁটতে হাঁটতে এসব দৃশ্যেরই দেখা পাবেন আপনি, যদি যান মাধবপুর লেকে।

মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় আছে এই অপরূপা লেকটি। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ বিনোদনের স্থান। বছরের যে কোনো সময়ে আনন্দভ্রমণ, পিকনিক বা বেড়ানোর জন্য বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-পরিজনদের নিয়ে যে কেউ আসতে পারেন মাধবপুর লেকে। তবে এখনো দেশের অনেকের কাছেই অচেনা-অজানা এই মাধবপুর লেক। পাহাড়ের বুকের ভেতর নিজের অস্তিত্ব নিয়ে মানুষের মাঝে প্রকৃতির সৌন্দর্য বিলিয়ে যাচ্ছে এটি।

এখানে এলে দেখতে পাবেন সবুজের সমারোহ, নাকে এসে লুটোপুটি খাবে সবুজ পাতার গন্ধ। পলকেই আপনার মনকে চাঙ্গা করে তুলবে এই প্রকৃতি। আপনি বিমোহিত হয়ে মিলিয়ে যাবেন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে। লেকের পানি, সুনীল আকাশ আর গাঢ় সবুজ পাহাড়, ছবির মতো চা বাগানের এই মনোরম দৃশ্য আপনাকে নিয়ে যাবে স্বপ্নের জগতে।

চারদিকে পাহাড়-টিলার মাঝখানে অবস্থিত লেকটি সত্যি অপূর্ব। প্রতিদিনই সৌন্দর্যপিপাসু পর্যটকরা আসছেন মাধবপুর লেকে। তবে কোনো সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এ পর্যটনের জায়গাটির দিকে নজর দিচ্ছে না। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে লেকটিকে আকর্ষণীয়ভাবে সংস্কার করা ও পর্যটকদের জন্য আরও উপযোগী করে গড়ে তোলা সম্ভব।

অনুসন্ধানে জানা গেল, মাধবপুর লেককে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সরকার ২০০৫ সালের ১০ অক্টোবর পর্যটন প্রকল্প হিসেবে হাতে নিয়েছিল। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লেকের পাশে পর্যটন বিকাশ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন। কিন্তু ইতোমধ্যে প্রায় পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও মাধবপুর লেককে দৃষ্টিনন্দন করে তোলার জন্য এখনও কোনো কাজ শুরু হয়নি।

মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নে পাত্রখলা চা বাগানে লেকটির অবস্থান। এটি মৌলভীবাজার থেকে ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে ও শ্রীমঙ্গল থেকে ১০ কিলোমিটার পূর্বে। এখন খানাখন্দে ভরা চা বাগানের রাস্তা দিয়ে যেতে হয়। অথচ ন্যাশনাল টি কোম্পানির মালিকানাধীন এই চা বাগানের ভেতরে অবস্থিত এ লেকটিকে বাণিজ্যিকভাবে সফল করে গড়ে তোলা সম্ভব। শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জে প্রতি মাসে অন্তত কয়েকশ বিদেশি পর্যটক আসেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পর্যটক প্রতিবারই মাধবপুর লেকে ঘুরতে আসেন। সরকার যেভাবে মাধবকুন্ড জলপ্রপাতকে পর্যটকদের উপযোগী করে গড়ে তুলেছে, সেভাবে মাধবপুর লেকটিকে পর্যটকদের উপযোগী করে গড়ে তোলা হলে দেশের মধ্যে এটি একটি অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র ও চিত্তবিনোদনের এলাকা হিসেবে স্থান পাবে।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ২১০৫, আগস্ট ০৪, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।