ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

সব বাধা পেরিয়ে

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৪
সব বাধা পেরিয়ে

অভাব আর দারিদ্রকে পিছু ফেলে শিক্ষা জীবনে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছে ওরা। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি আর অদম্য ইচ্ছা নিয়ে ওরা সবাই শিক্ষা জীবন শেষে স্বপ্নের মতো সাজাতে চায় নিজেদের জীবন।

দরিদ্র পরিবারের মেধাবী এই মুখগুলোতে হাসি ফোটাতে তাদের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে ওদের পাশে আছে সমাজের দুঃস্থ ও আর্তপীড়িত মানুষের সাহায্যের জন্য পরিচালিত বাংলানিউজের বিএনএসএস (বাংলানিউজ সোশ্যাল সাভির্স) ও হোপ বাংলাদেশ।  

ওরা ৪জন:

মৌমিতা মণ্ডল: বুড়িরডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১১সালে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ এবং মংলা কলেজ থেকে-১৩সালে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে। বাবা দিবস মণ্ডল একজন দরিদ্র মৎস্যজীবী। মা মিনা মণ্ডল একজন গৃহিণী। তাদের অভাবের সংসার চলছে কোনো মতো। দুইসন্তানের মধ্যে মৌমিতা বড় মেয়ে। সে এবার খুলনার বিএল কলেজে ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং শাখায় চান্স পেয়েছে।

মিলি মণ্ডল: মিলি মণ্ডল মংলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১১সালে এসএসসি পরীক্ষায় এবং মংলা কলেজ -১৩সালে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে। বাবা সরজিত মণ্ডল দিনমজুর ও মা সূচিত্রা মণ্ডল একজন গৃহিণী। তিন ভাই বোনের মধ্যে মিলি মন্ডল সবার বড়। তার লেখা পড়ার খরচ যোগাতে ইতিমধেই শেষ সম্বল বসত ভিটার সাড়ে ৩ কাঠা জমিও বিক্রি করতে হয়েছে। বর্তমানে স্বপরিবারে আশ্রয় নিয়েছে বাজুয়ায় অন্যের বাড়িতে। বাবার একার আয়ে মিলি ও তার ছোট ভাইয়ের লেখাপড়া তো দূরের কথা সংসারও চলে না।

মিলির স্বপ্ন ছিল ব্যাংকার হওয়ার, সে পথে সফল ভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে সে। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে মিলি।

ইসরাত জাহান রিতু: ইসরাত জাহান রিতু সেন্ট পলস উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে ও ১৩ এইচএসসিতে মংলা কলেজ থেকে বাণিজ্যিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে। বাবা আজাহার আলী হাওলাদার দীর্ঘদিন অসুস্থ, মা ঝর্না বেগম গৃহিণী। তাই ৪ মেয়ে ও ১ ছেলেসহ ৭ জনের সাংসার চলছে অভাব অনাটনে। তাই পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করলেও রিতুর ভবিষাৎ শিক্ষা জীবন অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। । কোথায় কীভাবে ভর্তি হবে এবং কেইবা যোগান দেবে লেখাপড়ার খরচ এ নিয়ে দুচিন্তায় ছিলেন তার অসুস্থ বাবা। রিতু ঢাকার তীতুমীর কলেজে ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং শাখায় চান্স পেয়েছে।

সুমি আক্তার: বাণিজ্যিক বিভাগে এ বছর মংলা কলেজ থেকে সুমি আক্তার জিপিএ-৫ পেয়েছে। বাবা আবুল বাসার প্যারালাইজড্ হয়ে বিছানায় রয়েছেন দীর্ঘদিন। মা ফুলজাহান বেগম আকড়ে ধরেছেন স্বামীর মৎস্যজীবীর পেশা। এই অবস্থার মধ্যেও সুমি সরকারি আজমখান কমার্স কলেজে অ্যাকাউন্টিং শাখায় চান্স পেয়েছে।

মেয়েদের উচ্চশিক্ষা দিতে পারবে কিনা এটা নিয়ে তাদের বাবা-মায়েরা যখন চরম হতাশায়, তখন তাদের পাশে দাঁড়ায় বাংলানিউজের বিএনএসএস। আর বিএনএসএস সঙ্গে সহযোগিতার হাত বাড়ায় হোপ বাংলাদেশের কানাডা প্রবাসী জিন্নাহ ইসলাম। প্রতিমাসে কিছু বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে তিনি ও বিএনএসএস-এর আহ্বায়ক শারমীনা ইসলাম সময় মতো তাদের পড়া ও মাস চলার জন্য চার জনের কাছে টাকা পাঠানো, নিয়মিত পড়াশোনার বিষয়ে তাদের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছেন আপনজনের মতো। তাদের পড়াশোনার পুরো সময়ে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়ার দায়িত্ব তুলে নিয়েছে বিএনএসএস ও হোপ বাংলাদেশ।

নিয়মিত সহযোগিতা ও সঠিক গাইডলাইন পেয়ে সুমি, রিতু, মৌমিতা ও মিলি বিএনএসএস ও হোপ বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায়।  
জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এরাও একদিন সমাজের দুঃস্থদের পাশে থেকে কাজ করতে চায়।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।