সূত্র জানায়, মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে থাকা বিদেশি শ্রমিকদের বৈধ করতে ২০১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে রি-হায়ারিং প্রকল্প হাতে নেয় দেশটি। এ প্রকল্পের মাধ্যমে নিবন্ধন করে অবৈধ শ্রমিকদের বৈধ করার সুযোগ দেয়া হয়।
মালয়েশিয়ায় বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশি কর্মী রয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় দুই লাখ কর্মীই অবৈধ। যাদের কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। অবৈধ কর্মীদের বৈধতা দিতেই রি-হায়ারিং প্রকল্প গ্রহণ করেছিলো দেশটির সরকার। রি-হায়ারিং প্রকল্পে নিবন্ধন শেষ ধাপে অবৈধ কর্মীদের বৈধতা দেবে বলেও জানিয়েছিলো দেশটি। তবে অনেক বাংলাদেশির পাসপোর্ট ও কাগজপত্র না থাকায় তারা এ সুযোগ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। মালয়েশিয়ায় রি-হায়ারিং প্রকল্প প্রায় আড়াই বছর ধরে চলেছে। আর এ সময়ের মধ্যে অবৈধ শ্রমিকদের ধরতে বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েছে দেশটির সরকার। এসব অভিযানে ইন্দোনেশিয়া, ভারত, পাকিস্তান ও ভিয়েতনামের নাগরিকদেরও গ্রেফতার করা হয়। গত আড়াই বছরে প্রায় তিন হাজার অবৈধ বাংলাদেশিকে গ্রেফতারও করে মালয় সরকার।
অবৈধ কর্মীদের ফেরাতে দেশটির সরকার থ্রি-প্লাস ওয়ান স্কিম চালু করেছে। এ স্কিমের আওতায় একজন অবৈধ কর্মী মালয়েশিয়া এয়ারপোর্ট ইমিগ্রেশনে চারশ’ রিঙ্গিত জমা দিয়ে নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে পারেন। তবে অনেক বাংলাদেশি অভিযোগ করেছেন, এয়ারপোর্ট গেলে চারশ’ রিঙ্গিতের জায়গায় আটশ’, হাজার বা বারশ’ রিঙ্গিত নেয়া হচ্ছে। আবার অনেককে হয়রানি করা হচ্ছে। সে কারণে অনেকেই এয়ারপোর্টে গিয়ে এ সুবিধা নিতে পারছেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুয়ালালামপুর থেকে বাংলাদেশি কর্মী শফিকুর রহমান শুক্রবার (১০ আগস্ট) বাংলানিউজকে জানান, অনেক অবৈধ বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফিরতে চায়। তবে এয়ারপোর্টে বেশি রিঙ্গিত দেয়া আর হয়রানির জন্য ফিরতে পারছেন না। চারশ’ রিঙ্গিত দিয়ে ফিরতে বলা হলেও হাজার রিঙ্গিত নেয়া হচ্ছে। আবার অনেকের কাছে এ রিঙ্গিত দেয়ার ক্ষমতাও নেই বলেও জানান তিনি।
এদিকে মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক সেরি মুস্তাফার আলী জানিয়েছেন, আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে এখান থেকে সব অবৈধ শ্রমিককে থ্রি-প্লাস ওয়ান পদ্ধতি অনুসরণ করে নিজ নিজ দেশে ফেরত যেতে হবে। যারা ওই তারিখের মধ্যে দেশে ফিরবেন না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেছেন, বৈধকরণ প্রকল্পে যারা নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হয়েছে তাদের আটক করা হবে। দেশের নিরাপত্তা রক্ষার তাগিদে কোনো পক্ষের সঙ্গে আপসে যাবে না প্রশাসন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০২ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৮
টিআর/এসএইচ