পাবনা: পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক অবৈধ পলিথিন বিক্রি ও বন্ধের বিরুদ্ধে পাবনাতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করছে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (০৫ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের পাবনা কলেজ সড়কের মেসার্স রুবেল ট্রেডার্স নামে একটি দোকানে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ পলিথিন জব্দ করা হয়।
দীর্ঘদিন পরে এই অবৈধ পলিথিন ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান চলাকালিন আশপাশের দোকানিরা দ্রুত তাদের মালামাল সরিয়ে ফেলেন।
এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন পাবনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী মেজিস্ট্রেট মো. মামুন সরকার ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. নাজমুল হোসাইনসহ জেলা পুলিশ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন।
দীর্ঘদিন পরিবেশের ক্ষতিকারক পলিথিন বিক্রি নিয়ে অভিযান পরিচালিত না হওয়ায় পাবনার বাজারগুলোতে পলিথিনের ব্যবহার ব্যাপক হারে বেড়েছে। শহরে প্রতিটি দোকানে প্রকাশ্যে পলিথিনে মালামাল সরবরাহ করছে বিক্রেতারা। আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকার কারণে পরিবেশের নীরব শত্রু ক্ষতিকারক পলিথিন এখন প্রকাশ্যে বেচা-বিক্রি হচ্ছে।
তবে এ অভিযানের বিষয়ে স্থানীয় হোসিয়ারি ব্যবসায়ীরা জানান, তাদের পণ্য বাজারজাত করতে এই পলিপেপার দরকার হয়। এটি বাজার করা বা বাড়িতে ব্যাহারের পলিথিন নয়। আর এই পলিথিন বিক্রি না হলে তাদের পণ্য প্যাকেট করতে পারবেন না। পলিপেপারে প্যাকেট না করলে গার্মেন্টস আইটেমের পোশাক বিক্রিতে সমস্যায় পড়তে হবে তাদের। তবে এই অবৈধ পলিথিন ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রচার প্রচারনা না থাকার কারণে এটি বন্ধ করা যাচ্ছে না।
ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে জানা যায়, পাবনার বিভিন্ন স্থানে এই অবৈধ পলিথিন কারখানা রয়েছে। সেই সব কারখানায় অভিযান পরিচালনা না করে দোকানগুলোতে অভিযান ও জরিমানা করে এই অভিযানের সুফলতা পাওয়া যাবে না বলে মনে করছেন তারা।
অভিযানের বিষয়ে জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুন সরকার বলেন, জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্যারের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সম্প্রতি লক্ষ্য করা গেছে বাজারগুলোতে ব্যাপক হারে নিষিদ্ধ ও অবৈধ পলিথিন ব্যবহার বেড়েছে। এই পলিথিন পরিবেশের নীরব শত্রু ও ক্ষতিকারক পণ্য। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখেতে অবৈধ পলিথিনের বিরুদ্ধে এখন থেকে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশে ২০০২ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ এর পরিপ্রেক্ষিতে পলিথিনের ব্যাগ উৎপাদন, ব্যবহার, বিপণন এবং পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়। আইন এর ২৫ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি নিষিদ্ধ পলিথিন সামগ্রী উৎপাদন করে তাহলে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, বাজারজাত করলে ছয় মাসের জেল জরিমানার বিধান রয়েছে।
কিন্তু বর্তমানে বাজারগুলোতে প্রকাশ্যে পলিথিনের ব্যবহার হলেও আইনের কোনো প্রয়োগ না থাকায় অবৈধ পলিথিন এখন বৈধভাবে ব্যবহার করছেন সবাই। তাই প্রশাসনের নজরদারি ও এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে পরিবেশ হুমকির মুখে পরবে বলে মনে করছেন সচেতন সাধারণ মানুষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০২৩
আরএ