ঢাকা, সোমবার, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৯ জুলাই ২০২৪, ২২ মহররম ১৪৪৬

জাতীয়

বন্ধুর ভগ্নিপতিকে ছাড়াতে এসে গুলশানে গুলি ছোড়েন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মিন্টু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৩
বন্ধুর ভগ্নিপতিকে ছাড়াতে এসে গুলশানে গুলি ছোড়েন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মিন্টু

ঢাকা: রাজধানীর গুলশানে গ্লোরিয়া জিন্স ক্যাফের পাশে গুলির ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে গুলশান থানা পুলিশ।  

আটকদের মধ্যে রয়েছেন, আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টু, মনির আহমেদ ও তার ভগ্নিপতি ওমান প্রবাসী আরিফ হোসেন।

মিন্টু ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন।  

ঘটনার সময় অভিযুক্ত আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টু তার সঙ্গে থাকা লাইসেন্সকৃত পিস্তল দিয়ে সাত-আট রাউন্ড গুলি ছোড়েন। দুটি গুলি ঘটনাস্থলে থাকা এক গাড়িচালক ও ভ্যানচালকের পায়ে লাগে।

ভুক্তভোগী বিকাশ দোকানি হাবিবুর রহমান আলিফ ও আশপাশের দোকানিদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, রোববার বিকেল আনুমানিক ৪টার দিকে আরিফ হোসেন বিকাশ করার জন্য গ্লোরিয়া জিন্স ক্যাফের পাশে আলফা স্টোর নামে একটি দোকানে আসেন।  

তিনি দোকানিকে বলেন, ‘আপনি ৭৫ হাজার টাকা বিকাশ করেন, আমি টাকা দিচ্ছি। ’ এতে দোকানি তার দেওয়া নম্বরগুলোতে টাকা পাঠান। কিন্তু টাকা না দিয়ে টালবাহানা শুরু করেন আরিফ।  

এতে দোকান মালিক আরিফকে আটক করে বলেন, ‘আপনি টাকা না দিয়ে যেতে পারবে না। ’ এক পর্যায়ে আটক অবস্থায় আরিফ তার ভগ্নিপতি মনির আহমেদকে কল করে বিষয়টি জানান।  

কল পেয়ে মনির হোসেন তার বন্ধু আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টুসহ আরও চার-পাঁচজনকে নিয়ে ওই দোকানে আসেন। তারা আরিফকে ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা চালান। কিন্তু আশপাশের দোকানিরাও তাকে ছাড়তে চাইছিলেন না। আর এমন সময় মিন্টু পিস্তল বের করে সাত-আট রাউন্ড গুলি ছোড়েন। এতে দুইজন গুলিবিদ্ধ হন।

থানা সূত্রে জানা গেছে, আটক আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টু ঢাকার কদমতলী থানার শ্যামপুরের দক্ষিণ দনিয়ার নুরপুরের মো. আব্দুল বারেকের ছেলে। মিন্টু ২০১৩ সালে তার লাইসেন্স করা পিস্তলটি কেনেন। এটি রি-নিউ করার পর মেয়াদ রয়েছে ২০২৪ সাল পর্যন্ত।  

তবে আটকের পরও অভিযুক্তের রাজনৈতিক পরিচয় পুলিশ নিশ্চিত করতে না পারেনি। যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইসহাক মিয়া অভিযুক্ত মিন্টুর রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করেন।

মহানগর উত্তর শাখা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইসহাক মিয়া বলেন, গুলশানে ঘটনার বিষয়ে আমরা জেনেছি। আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টু ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন। তবে তার ব্যক্তিগত কোনো অপরাধের দায় সংগঠন বা দল নেবে না। এরপরও এই ঘটনার তদন্তের জন্য আমরা তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গুলশান থানা পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টুর পিস্তল থেকে ছোড়া গুলিতে আমিনুল ইসলাম নামে একজন গাড়িচালক ও রহিম নামে একজন ভ্যানচালক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আব্দুল আহাদ বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়ে প্রচলিত আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন। ঘটনার তদন্ত চলমান।  

ডিসি আব্দুল আহাদ বলেন, এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় আমরা তিনজনকে আটক করেছি। আটকরা হলেন, আরিফ হোসেন, মনির আহমেদ ও আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টু। তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন ।  

আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টুর রাজনৈতিক পরিচয় জানা গিয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিন্টু এমএস প্রোগ্রেসিভ এন্টারপ্রাইজের নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। তিনি যাত্রাবাড়ীতে থাকেন বলে জানিয়েছেন। তার রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৩
এসজেএ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।