যশোর: যশোরের অভয়নগরে ভৈরব নদের তীরে সরিষা ক্ষেত থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত মৃতদেহটির পরিচয় মিলেছে। নিহতের নাম ফরিদ গাজী (১৯)।
নিহত ফরিদের বাড়ি অভয়নগর উপজেলা পরিষদ এলাকার গুয়াখোলা শাহী বস্তি এলাকায়। বাবার নাম আফিল উদ্দীন গাজী (মৃত), মা আম্বিয়া বেগম। রোববার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে স্থানীয় লোকজন ভৈরব ব্রিজের পাশে দক্ষিণ দেয়াপাড়া গ্রামে সরিষা ক্ষেতে ফরিদের মরদেহ দেখে পুলিশকে জানায়। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) তার পরিচয় শনাক্ত করে পরিবার। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত ফরিদের সহযোগী নড়াইল সদর থানার যদুনাথ পুর গ্রামের সাখাওয়াত মোল্যার ছেলে শান্ত (২১) ও একই গ্রামের ছবুর মোল্যার ছেলে সাকিব মোল্যাকে (২১) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের দেওয়া তথ্য অনুসারে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবহৃত একটি চাকু জব্দ করা হয়েছে।
ঘটনাটি নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করেছে অভয়নগর থানা। এতে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম শামীম হাসান।
তিনি জানান, নিহত ফরিদের সঙ্গে শান্ত ও সাকিবের পরিচয় হয় কারাগারে। একটি ধর্ষণ মামলায় কারাগারে ছিলেন ফরিদ। জামিনে বের হয়ে তারা নওয়াপাড়ার বেঙ্গল মিলের পাশে একটি রুম ভাড়া নেন। সেখানে থেকে তারা জাহাজের স্কটের কাজ করতেন। এ ছাড়া অন্যান্য কাজের পাশাপাশি চুরিও করতেন। সম্প্রতি ফরিদ তার সহযোগীদের কিছু অর্থ আত্মসাৎ করে। তারা ফরিদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
রোববার সন্ধ্যায় পরিকল্পনা অনুসারে ফরিদকে শ্যালো ম্যশিন চুরির লোভ দেখিয়ে ভৈরব ব্রিজের কাছে ডেকে আনেন। তিনি সেখানে গেলে শান্ত ও সাকিব তাকে চাকু দিয়ে আঘাত করেন। পরে তাকে জবাই করে হত্যা করেন তারা।
এ ঘটনায় ফরিদের বড় ভাই ফারুক গাজী বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় মামলা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে ডিবি ও থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে শান্ত ও সাকিবকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করে পুলিশ।
ফরিদের মরদেহ উদ্ধারের পর রোববার বিকেলে তার আঙুলের ছাপ নিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু এতে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরে তার পকেটে থাকা চিরকুট থেকে একটি মোবাইল নম্বর পাওয়া যায়। সেই সূত্রে ধরে ফরিদের পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৩
ইউজি/এমজে