ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সবাই হিজড়াদের প্রতি অবিচার করে: সাংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩
সবাই হিজড়াদের প্রতি অবিচার করে: সাংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা: সাংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, সমাজ, রাষ্ট্র সবাই তাদের (হিজড়া জনগোষ্ঠীর) প্রতি অবিচার করে। তারা যাবে কোথায়, তাদের আশ্রয়স্থলটা কোথায়?

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহীম মিলনায়তনে আঞ্চলিক আর্ট ও চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বন্ধু সোশ্যাল ওয়েল ফেয়ার সোসাইটি (বন্ধু) আয়োজিত তিন দিনব্যাপী আঞ্চলিক আর্ট ও চলচ্চিত্র উৎসব রিইনকারনেট-৩, ১৮ থেকে শুরু হয়ে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কে এম খালিদ বলেন, সৃষ্টির অপার সৌন্দর্যের মাঝে এক বেদনাঝরা জীবন হিজড়া জনগোষ্ঠীদের। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় তারা এখনো অনেক পিছিয়ে। পেশা হিসেবে বাজারে, বাসে, রাস্তায়, দোকানে টাকা তুলে জীবন নির্বাহ করছেন। রাস্তাঘাটে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের শিকার হচ্ছেন। অথচ এরা আমাদেরই ভাই-বোন। আমাদের উচিত সমাজে এদের জায়গা করে দেওয়া। পরিবার যখন অবজ্ঞা-অস্বীকার করে তাদের তাড়িয়ে দেয়, তখন আমাদেরই তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। এখন সময় এসেছে তাদের সবকিছুতে অধিকার দেওয়ার।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বের সব থেকে বড় ফ্রাঙ্কফুট বইমেলায় দেখেছি সেটির আয়োজক হিসেবে প্রথমে ছিলেন ইউনেস্কোর ডিজি এবং দ্বিতীয় হিসেবে ছিলেন এই হিজড়া সম্প্রদায়ের একজন। সেখানে কী বিশাল সম্মান তার! উন্নত বিশ্বেও তাদের নিয়ে প্রচুর কাজ হচ্ছে। আমাদের দেশে আমরা যারা বিত্তশালী আছি, আমরা তাদের নিয়ে ভাবতে পারি। আমরা যদি তাদের গ্রহণ না করি, তাহলে তারা যাবে কোথায়? আমাদের দৃষ্টি বদলাতে হবে। আমাদের ভাবতে হবে প্রত্যেকটি হিজড়া আমাদের পরিবারের সদস্য।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নানাবিধ আলোচনা অনুষ্ঠানে আমি এদের জন্য একটি চেয়ার রাখার ব্যবস্থা করব, যেন তারা সেসব আলোচনায় অংশ নিতে পারেন। এছাড়া আমাদের প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে ৫ থেকে ১০ মিনিট এই হিজড়াদের পারফরমেন্সের জন্য বরাদ্দ রাখারও চেষ্টা করব। যেন তারা মাথা উঁচু করে, সম্মান নিয়ে বাঁচতে পারেন। আর তাদের নিয়ে এমন আর্ট ও চলচ্চিত্র উৎসব সত্যিই প্রশংসাযোগ্য।

এবারের উৎসবে দক্ষিণ-এশিয় অঞ্চলের ৬টি দেশের ট্রান্সজেন্ডার ও হিজড়া জনগোষ্ঠী নিয়ে নির্মিত ২৫টি চলচ্চিত্র ও তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে। পাশাপাশি ২৫টি শিল্পকর্মের একটি প্রদর্শনী মিলনায়তনের গ্যালারিতে তিন দিন চলবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নৃত্যনাট্য পরিবেশন করেন ট্রাসজেন্ডার ও হিজড়া নৃত্যশিল্পীদের নিয়ে গঠিত বন্ধু’র সাংস্কৃতিক দল ‘সত্তা’। নৃত্যনাট্যটি কোরিওগ্রাফি করেছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নিপা।

অনুষ্ঠানে বন্ধুর চেয়ারপার্সন আনিসুল ইসলাম হিরুর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, পুলিশের অতিরিক্ত আইজি হাবিবুর রহমান, ঢাকাস্থ আমেরিকান দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন হেলেন লাফেব,  ইউএনএইডস বাংলাদেশের পরিচালক ডা. সায়মা খান।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২২
এমএমআই/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।