রাজশাহী: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মন্দাপীড়িত বিশ্বে মানুষের কল্যাণই সর্বাগ্রে এবং সে কারণে ইভিএম প্রকল্পে ব্যয় না বাড়িয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে যতগুলো আসনে ইভিএম করা সম্ভব, আমরা সেটা মেনে নেবো।
রাজশাহীতে রোববার (২৯ জানুয়ারি) আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জনসভার প্রস্তুতি উপলক্ষে সেখানে মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে শনিবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইভিএম নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছি। আমরা অবশ্যই চাই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) আধুনিক প্রযুক্তি এখন বিশ্বে ব্যবহার হয়, যেখানে কারচুপি বা অন্য কোনো সুযোগ নেই, সেটি ব্যবহার করতে। দেশে খালেদা জিয়ার সময় যে স্লোগান ছিল ‘দশটা হোন্ডা, বিশটা গুন্ডা, নির্বাচন ঠাণ্ডা’, এগুলো বন্ধ করার জন্য আমরা ইভিএম চেয়েছি। নির্বাচন কমিশন ইভিএম পদ্ধতির জন্য প্রায় পৌনে নয় হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব করেছে, যেহেতু ইভিএমগুলো কিনতে হবে। কিন্তু এই বিশ্বমন্দা অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে এ প্রকল্প পাস করে ইভিএম কেনা সমীচীন নয়, কারণ এ সময়ে আমাদের কাছে মানুষের অন্যান্য কল্যাণ অগ্রাধিকার।
তিনি বলেন, আমরা চাইলেও বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন যদি সব আসনে ইভিএমে ভোট করতে না পারে, যে কয়টি আসনে করতে পারুক, আমরা সেটা মেনে নেবো।
নির্বাচনকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি অনড় এমন এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশ যেমন ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কন্টিনেন্টাল ইউরোপের দেশগুলোর মতোই আমাদের দেশে সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হবে। জিততে পারবে না জেনেই বিএনপি নির্বাচন নিয়ে তালবাহানা করে।
উদাহরণ দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ডান-বাম-অতি ডান-অতি বাম সব দলকে সঙ্গে নিয়ে ২০০৮ সালের নির্বাচন ও তারপর উপনির্বাচন মিলে ৩০টির মতো আসন পেয়েছিল। ২০১৪ সালে নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে বিএনপি পাঁচশ'র বেশি ভোটকেন্দ্র স্কুল ও সেখানকার শিক্ষার্থীদের বইখাতা পুড়িয়ে দিয়েছে, কয়েকজন নির্বাচন কর্মকর্তাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও সংশয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত সবরকম জোট করে ছয়টি আসন পেয়েছে।
সহজেই বোঝা যায়, নির্বাচনে জেতার কোনো আশা তাদের নেই আর সে কারণেই তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অলীক স্বপ্ন, এতো তালবাহানা' উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, আমরা চাই, সব দল নির্বাচনে আসুক, আমরা খেলেই জিততে চাই।
বিএনপি নেতাদের ‘রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের জনসভায় তেমন লোক হবে না’ এমন মন্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যেসব নেতারা রাজশাহীতে লোক হবে না বলছেন, তাদের এসে দেখে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, তারা চাইলে প্রয়োজনে হেলিকপ্টার দিয়ে তাদের আনার ব্যবস্থা করা হবে।
রোববারের জনসভায় ১৪ দলের নেতারা যোগ দিতে পারবেন কিনা আরেক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, জনসভাটি আওয়ামী লীগের, ১৪ দলীয় জোটের নয়। তবে আমাদের জোটের শরিকরা, তারা আমন্ত্রিত, তারা এলে আমরা খুশি হবো।
সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, সংসদ সদস্য (এমপি) মো. আয়েন উদ্দিন, দলের কেন্দ্রীয় সদস্য বেগম আকতার জাহান, রাজশাহী মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল সরকার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২৩
আরআইএস