ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

৩৪ মাহফিলের আয়োজন করে স্বীকৃতি পেলেন তৃতীয় লিঙ্গের আনোয়ারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩
৩৪ মাহফিলের আয়োজন করে স্বীকৃতি পেলেন তৃতীয় লিঙ্গের আনোয়ারা

যশোর: নিজের উপার্জিত টাকা দিয়ে মানবসেবার পাশাপাশি ৩৪টি ওয়াজ-মাহফিলের আয়োজন করায় মানবিক কাজের স্বীকৃতি পেয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের আনোয়ারা বেগম।  

ভূমি-গৃহহীন আনোয়ারা বেগমকে এই সম্মাননা দিয়েছেন আবু কাজেম ফাউন্ডেশন।

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে যশোরের নওয়াপাড়ায় আনোয়ারার অস্থায়ী নিবাসে তার হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন আবু কাজেম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আরশাদ পারভেজ।

এ সময় ইঞ্জিনিয়ার আরশাদ পারভেজ বলেন, নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে গেলে বা ভালো কাজ করতে গেলে ভুলভ্রান্তি থাকবেই। এগুলোকে উপেক্ষা করেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। ধৈর্য্যচ্যুত হয়ে লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে এলে দেশের ক্ষতি হবে, দেশ পিছিয়ে পড়বে। তাই আমাদের সমালোচনার পাশাপাশি সঠিক সিদ্ধান্তের জন্য ভালো কাজের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।

আরশাদ পারভেজ আরও বলেন, কাজের স্বীকৃতিই বড় কথা, আর এই স্বীকৃতি পেলে কাজের অনুপ্রেরণা বাড়ে। ‘আবু কাজেম ফাউন্ডেশন’ এর মতো অনেক সংগঠন আছে বিধায়ই মানুষ এখনও মানবিক কাজের স্পৃহা পায়।

এ সময় আনোয়ারা ও তার গোষ্ঠীকে সহায়তার ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন ইঞ্জিনিয়ার আরশাদ পারভেজ।

আনোয়ারা বর্তমানে অভয়নগরের নওয়াপাড়া পৌর এলাকার ক্লিনিকপাড়ায় ভাড়া বাসায় জীবন কাটাচ্ছেন। ৭৪ বছর বয়সী অনোয়ারার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে যশোরে। মাত্র ১১ বছর বয়সে পিতৃভূমি নারায়নগঞ্জ ছেড়েছেন তিনি।  

ঘরছাড়া আনোয়ারা পেশাগত কারণে নওয়াপাড়া আসেন। এরপর তিনি এখানে বসবাস শুরু করেন। প্রায় ১১ জনের একটি গোষ্ঠি তার সঙ্গে যুক্ত হয়। তিনি ছিলেন দল নেতা। করোনাকালে পেশায় ভাটা পড়ে। একে একে অনেকেই তাকে ছেড়ে চলে যায়। কলারোয়ার মনিরা (৩০), অভয়নগরের কাদিরপাড়ার ইতি (২৭), বউবাজারের মিরা (২৫), শংকরপাশার রঙিলা (৪০) এখনো তার সঙ্গে রয়েছেন। যা আয় করেন, তাই দিয়ে সংসারের ঘানি টানেন, ওষুধ কিনে খান। আর প্রতি মাসে কিছু টাকা জমান। সে টাকা দিয়েই ধর্মীয় কাজে অংশ নেন।

আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমার বসবাসের কোনো জায়গা-জমি নেই। পরের বাড়িতে ভাড়া থাকি। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি ঘর ছাড়া আর কিছুই চাই না।

তিনি বলেন, যে কোনো মানবিক কাজের স্বীকৃতি পেলে কাজের স্পৃহা আরও বেড়ে যায়। কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় পরিবার এবং শুভানুধ্যায়ীদের ইতিবাচক বাধার সম্মুখীনও হতে হয়। তাই বলে নিজের দায়িত্ব থেকে কখনো সরে আসিনি। করোনাকালীন সময়ে ওই ভয়াল পরিবেশে কাজ করেছি মানুষের জন্য। মৃত্যুভয় এড়িয়ে মানুষের কল্যাণে ছুটে গেছি। দেরিতে হলেও আজ এই মানবিক কাজের স্বীকৃতি পেলাম।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২৩
ইউজি/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।