ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বীর মুক্তিযোদ্ধার কোমরে দড়ি, সমালোচনা-ক্ষোভ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৩
বীর মুক্তিযোদ্ধার কোমরে দড়ি, সমালোচনা-ক্ষোভ

নরসিংদী: নরসিংদীতে বিএনপি নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেক রিকাবদারকে (৭০) কোমরে দড়ি বেঁধে আদালতে নেওয়া হয়। এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগেরমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

তবে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কোমরে দড়ি বাঁধার বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে সমালোচনা।

এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূঁইয়া দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

গত শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কোমরে দড়ি ও হ্যান্ডকাফ বেঁধে তাকে শিবপুর থানা থেকে নরসিংদীর আদালতে তোলা হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেক রিকাবদার শিবপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।

পুলিশ ও বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই নিজ বাড়ির সামনে থেকে আবু ছালেককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন শনিবার বিকেলে তাকে গত বছরের নভেম্বর মাসের একটি রাজনৈতিক মামলায় নরসিংদীর আদালতে পাঠানো হয়। এ সময় আরও কয়েকজনের সঙ্গে তার কোমরেও দড়ি বাঁধা হয় ও হ্যান্ডকাফ পরানো হয়। ওই দিন আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

সংসদ সদস্য জহিরুল বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আটকের খবর পেয়ে আমি থানায় ফোন দিয়ে অনুরোধ করেছিলাম, যেন তাকে কোনো অসম্মান বা হয়রানি না করা হয়। পরদিন কোমরে দড়ি বেঁধে তাকে থানা থেকে আদালতে পাঠানোর ছবি দেখে খুবই কষ্ট পেয়েছি। পরে ওসির কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানান, আবু ছালেক বীর মুক্তিযোদ্ধা বিষয়টি তিনি জানতেন না।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির বলেন, শনিবার সারা দেশে বিএনপি ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে। শিবপুরে যাতে সেই কর্মসূচি সফল না হয় এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করতে শুক্রবার রাতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেক রিকাবদারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার মতো একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে কোমরে দড়ি বেঁধে আদালতে নিতে হবে? তিনি কি পালিয়ে যাবেন? যে মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে, ওই মামলার আসামি আমিসহ আরও ১৮ জন।

ঘটনাটিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিবপুরের মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার আবদুল মান্নান খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহসীন নাজির, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুনুর রশীদ খান, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন মাস্টার প্রমুখ।

একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হাতকড়া পরানোর পরও কোমরে দড়ি বাঁধার কারণ জানতে চাইলে শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার বলেন, আবু ছালেক রিকাবদারকে কোমরে রশি দিয়ে বাঁধার বিষয়টি তিনি জানতেন না। যারা তাকে আদালতে নিয়ে গেছেন, তারাই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।

সেক্টর কমান্ডার ফোরাম ’৭১ নরসিংদীর সভাপতি ও সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোতালিব পাঠান বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধার কোমরে দড়ি বাঁধার ঘটনায় বীর মুক্তিযোদ্ধারাসহ সাধারণ মানুষ কষ্ট পেয়েছেন। জাতির বীর সন্তানদের যেন পুলিশ এভাবে আর অপমান করার সাহস না পায়, এ জন্য সরকারের কাছে পুলিশকে সতর্ক করে দেওয়ার অনুরোধ জানাই।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।