রংপুর: রংপুরের গঙ্গাচড়ায় এক গৃহবধূর আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলসহ থানা ঘেরাও করেছেন নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে গঙ্গাচড়া মডেল থানা ঘেরাও করেন তারা।
নিহত গৃহবধূ রোকসানা বেগম উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের চারআনী শেরপুর গ্রামের তফেল উদ্দিনের মেয়ে।
রোকসানার ছোট ভাই বুলবুল মিয়া বলেন, প্রায় ১৮ বছর আগে গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের শান্তিপাড়া গ্রামের আলমগীর হোসেনের বড় ছেলে শামসুজ্জামান বাবুর (৩৯) সঙ্গে বিয়ে হয় আমার বোন রোকসানার। বিয়ের পর থেকে সব কিছু ঠিকঠাক চলছিল। তবে দুই বছর আগে রিংকি নামে একটি মেয়ের সঙ্গে বাবু পরকীয়ায় লিপ্ত হলে অশান্তির সূচনা হয়। আমার বোন আগেই আমাদের বিষয়টি জানিয়েছিল। পরকীয়ার কারণে আমার বোনকে বাবু ও তার পরিবারের লোকজন মিলে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে।
তিনি আরও বলেন, দুই বছরে প্রায় ৮ থেকে ১০ বার এলাকার লোকজন মিলে বাবুর বাড়িতে গিয়ে সালিশ করে দিয়েছি। সালিশের কিছুদিন যেতে না যেতে আবারও বাবু ওই মেয়ের সঙ্গে মেলামেশা শুরু করেন। এ বিষয়ে আমার বোন কিছু বললেই বাবু তাকে মারধর করতো। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রিংকি নামের ওই নারীকে বাবু বিয়ে করেন। বিষয়টি জানতে পেরে আমার বোন চিল্লাচিল্লি করেন। এরপর বাবু আমার বোনকে মারধর করেন। এক পর্যায়ে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তখনই বাবু তাকে বিষ খাইয়ে দেন। পরে আমরা থানায় অনেক বার এসে পুলিশকে বিষয়টি জানানোর পরেও কোনো মামলা নিতে চায়নি পুলিশ। কিন্তু শেষে অনেক শর্ত দিয়ে আমার বোন মারা যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর থানায় মামলা নেওয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে বাবুসহ ছয়জনকে আসামি করে গঙ্গাচড়া মডেল থানায় মামলা করেন নিহত রোকসানা বেগমের বাবা তফেল উদ্দিন।
গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। কিন্তু তারা পলাতক থাকায় এখনও ধরতে পারা সম্ভব হয়নি। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় গ্রেফতার করা হচ্ছে না বিষয়টি এমন না।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩
এফআর