ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘ মহাসচিবকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান

মহিউদ্দিন মাহমুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫২ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০২৩
যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘ মহাসচিবকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান

দোহা, কাতার থেকে: সারা বিশ্বের মানুষের ভোগান্তির কথা তুলে ধরে দ্রুত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেসকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (৪ মার্চ) কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।

পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

মন্ত্রী জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুত যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে বলেছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিবকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধের ফলে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে স্যাংশনের কারণে জিনিসপত্র ঠিকমতো না আসায় দেশে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। এতে মানুষের অনেক কষ্ট হচ্ছে। দুনিয়াজুড়ে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যুদ্ধ বন্ধ করা দরকার।

শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধ তাড়াতাড়ি শেষ হলে দেশের জন্য, দশের জন্য মঙ্গল হবে। রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার এক বছরের বেশি সময় ধরে চলমান এ যুদ্ধের কারণে যারা বেশি লাভবান হচ্ছেন, তাদের উচিত যুদ্ধে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সেসব দেশকে সাহায্য করা।

বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মানুষের কষ্ট লাঘবে সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে প্রায় এক কোটি নিম্ন আয়ের মানুষকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী দিচ্ছে সরকার।

বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট ও দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন বিষয়ে আলোচনা হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রায় ছয় বছর হচ্ছে, একজন রোহিঙ্গাও ফেরত যায়নি। সবাই আমরা চেষ্টা করছি।

বৈঠকে মিয়ানমারে রাজনৈতিক পরিবর্তন পর্যন্ত অপেক্ষা করা ঠিক হবে না এ বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক মত হয়েছেন। কারণ মিয়ানমারে পলিটিক্যাল পরিবর্তন কখন, কবে হবে ঠিক নেই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ মহাসচিবকে এ ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ করেছেন।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে পরিস্থিতি অবনতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি এ রোহিঙ্গারা অনেকে অপকর্মে নিযুক্ত হচ্ছে। মাদক কারবারি, মানবপাচার, এমনকি মারামারি। আগামীতে এটা বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে।

কক্সবাজার ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের ভাষানচরে স্থানান্তর বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাষানচরে নেওয়া হয়েছে। আপনারা সাহায্য করলে আরও অনেককে আমরা সেখানে নিয়ে যেতে পারবো।

জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, এ ব্যাপারে আপনি (শেখ হাসিনা) একটা উদ্যোগ নিতে পারেন।

বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় উগ্রবাদ বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, কোন কোন জায়গায় ধর্মের নামে ধর্মান্ধতা হচ্ছে।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা ধর্মান্ধ তাদের আসলে কোনো ধর্ম নেই। তাদের কোনো বাউন্ডারি নেই। এ ব্যাপারে আমরা সবাই এক সঙ্গে ধর্মান্ধতা বন্ধ করতে পারলে খুব ভালো হবে।

এর আগে দোহায় স্বল্পোন্নত দেশসমূহের পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনে (এলডিসি-৫) যোগ দিতে কাতার পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (৪ মার্চ) স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে শনিবার (৪ মার্চ) সোয়া ১১টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-৩২৫ ভিভিআইপি ফ্লাইটে দোহার উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০২৩
এমইউএম/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।