ঢাকা, সোমবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০ মহররম ১৪৪৬

জাতীয়

ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি দিয়ে থানায় নিলেন তরুণী!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২৩
ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি দিয়ে থানায় নিলেন তরুণী!

পাবনা: বিয়ের দাবিতে নুরুল ইসলাম শাওন নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে জনসম্মুখে গণপিটুনি দিয়ে টেনে হিঁছড়ে থানায় নিলেন রুপা খাতুন নামে এক তরুণী।

তরুণীর দাবি, বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে তিন বছরের বেশি সময় ধরে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেছেন তারা।

পরে বিয়ে না করেই নগদ অর্থ হাতিয়ে লাপাত্তা হন অভিযুক্ত শাওন।

বুধবার (২২ মার্চ) এ ঘটনার বেশ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।  

এর আগে মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাত ৭টার দিকে পাবনার ঈশ্বরদী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত নুরুল ইসলাম শাওন ঈশ্বরদী পূর্বটেংরি ঈদগাহ রোড এলাকার মো. শহীদুল ইসলামের ছেলে এবং ঈশ্বরদী পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।  

ভুক্তভোগী রুপা খাতুন ঈশ্বরদীর সীমান্তবর্তী নাটোরের সিংড়া এলাকার মেয়ে এবং ঈশ্বরদী ইপিজেডের একজন কর্মী।

ভুক্তভোগী রুপা খাতুনের দাবি, ঈশ্বরদী ইপিজেডে চাকরির সুবাদে শাওনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তিনি। এক পর্যায়ে দুজনে ঘুরতে বের হলে দাশুড়িয়ার একটি পেপার মিলে প্রথম রুপাকে ধর্ষণ করেন শাওন। রুপা থানায় ধর্ষণের অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নিলে শাওনের বাবা-মা তাদের ছেলের সঙ্গে রুপার বিয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। এতে অভিযোগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন রুপা। এরপর তাদের অবাধ মেলামেশা চলতে থাকে। তবে নানা টানাপোড়েনে আবারও ফাটল ধরে তাদের সম্পর্কে। এবার রুপাকে বশ করতে শাওনের বাবা-মা তাকে তাদের ঈদগাহ রোডের বাড়িতে নিয়ে তোলেন। সেখানেও বিয়ে ছাড়াই ছেলে ও মেয়েকে অবাধ মেলামেশার সুযোগ করে দেন তারা। দুইমাস পর ছাত্রলীগের কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে রুপাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় শাওনের পরিবার।

রুপা আরও দাবি করেন, তিনি আবারও থানা-পুলিশের শরণাপন্ন হওয়ার চেষ্টা করলে শাওন কৌশলে তাদের বিশেষ মুহূর্তের সময় ধারন করা ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেবেন বলে হুমকি দিতে থাকেন। সেই হুমকি আর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রুপার কাছ থেকে বেশ কিছু টাকা নিয়ে লাপাত্তা হন শাওন।  

এর জেরে গত মঙ্গলবার (২১ মার্চ) শাওনকে ঈশ্বরদী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে পেয়ে আটক করেন তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মেয়েটি বিয়ের দাবিতে শাওনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ায়। এসময় আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে শাওন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে মেয়েটি ও স্থানীয় লোকজন তাকে ধরে ফেলে এবং গণপিটুনি দেয়। পরে তাকে নিয়ে থানায় যায় মেয়েটি। তবে সেখানে দুজনের মধ্যে কেউই লিখিত অভিযোগ না দেওয়ায় ঈশ্বরদী থানা পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়।

পরে এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করেও অভিযুক্ত প্রেমিক ও ছাত্রলীগ নেতা নুরুল ইসলাম শাওনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।  

তবে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, প্রেমিক-প্রেমিকা উভয়েরই কোনো অভিযোগ না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি পুলিশ। । সঙ্গত কারণেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।