ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘২১ বছর স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলা হয়েছিল’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২৩
‘২১ বছর স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলা হয়েছিল’

ঢাকা: বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরবর্তী ২১ বছরে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে মুছে ফেলা হয়েছিল। নতুন প্রজন্ম স্বাধীনতার ইতিহাস জানতো না।

বঙ্গবন্ধুর নাম মুখে উচ্চারণ করা যেত না। পাকিস্তানের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে এটাও বলা যেত না।

রোববার (২৬ মার্চ) দুপুরে আগারগাঁওয়ের বন ভবনে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনায় যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালে অনুধাবন করতে পেরেছিলেন পাকিস্তানের অধীনে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতার স্বাদ পাবে না। সে কারণেই তিনি স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতেন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬৬ সালের ৬ দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭০’র নির্বাচন এরপর ৭১ সালে স্বাধীনতা; ধারাবাহিকভাবে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন বঙ্গবন্ধু। হঠাৎ করে একদিনে তিনি ৭ কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারতেন না। একটি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে তার ২৩ বছর সময় লেগেছে। বঙ্গবন্ধুর মতো নেতা পাওয়া বিরল; তাকে পাওয়া সৌভাগ্যের এজন্য আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। কিন্তু আমরা দুর্ভাগা জাতি বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে পারিনি। সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে পরাজিত শক্তিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে।

শাহাব উদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর ২১ বছর স্বাধীনতা ইতিহাস মুছে ফেলা হয়েছিল। এ সময় দেশের কোনো উন্নয়ন হয়নি। স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৯৬ সালে আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে পুনরুদ্ধার করেছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়া, দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। আজ তার সুযোগ্য কন্যা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর একের পর এক পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশ এগিয়ে চলেছেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার বলেন, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ উচ্চারণের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর নাম অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। বঙ্গবন্ধু ছাড়া বাংলাদেশের কথা চিন্তা করা যায় না। বাঙালি এমন একটি জাতি যাদের জীবনের বারবার এসেছে পরাধীনতা। কিন্তু কোনো কিছুই বাঙালিকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি, পারবেও না।

মুখ্য আলোচক হিসেবে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস’র বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসাইন চৌধুরী বলেন, তিনি চেয়েছিলেন রাজনৈতিক সংকটে রাজনৈতিক সমাধান আর পাকিস্তান চেয়েছিল রাজনৈতিক সংকটে সামরিক সমাধান। বঙ্গবন্ধু ঠাণ্ডা মাথার ছিলেন আর পাকিস্তানের সেনা প্রধানরা গরম মাথার ছিলেন। ঠাণ্ডা মাথা আর গরম মাথার লড়াইয়ে ঠাণ্ডা মাথার জয় হয়েছে, আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নিয়ে আমরা কাজ করছি। তবে এই স্বীকৃতি পেতে বাংলাদেশকে আরও তৎপর হতে হবে।

অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসটা আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে বঙ্গবন্ধু দর্শন নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২৩
এসএমএকে/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।