ঢাকা: ব্যয়বহুল প্রজেক্ট মেট্রোরেলের খরচ ওঠা নিয়ে সংশয় থাকলেও স্বল্প যাত্রায় যে আয় হচ্ছে তা আশা দেখাচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও মেট্রোরেলের প্রথমার্ধে এখন পর্যন্ত ১০ লাখ ৭৭ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেছে।
অন্যদিকে উদ্বোধনের পর থেকে এ পর্যন্ত মেট্রোরেলের ব্যয় হয়েছে ৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এই ব্যয়ে বিদ্যুৎ বিল, আনসার, স্কাউটসহ পুরো ব্যবস্থাপনা খরচ যুক্ত আছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) রাজধানীর প্রবাসী কল্যাণ ভবনের মেট্রোরেলের সভা কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, পুরোপুরিভাবে মেট্রোরেল চালু না হলে এর সঠিক হিসাব বলা যাবে না। সাংবাদিকদের অনুরোধে আনুমানিক একটা হিসাব দেওয়া হয়েছে।
এর আগে আগামী ৫ এপ্রিল থেকে উত্তরা থেকে আগারগাঁওয়ের মধ্যবর্তী সব স্টেশনে মেট্রোরেল চলবে বলে ঘোষণা দেন এম এ এন ছিদ্দিক। তিনি বলেন, যাত্রী চাহিদার কথা বিবেচনা করে মেট্রোরেল চলাচলের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে দুই ঘণ্টা। বর্ধিত সময়সূচি অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। এ ছাড়া নতুন দুটি স্টেশন চালু হলে যাত্রীসংখ্যা আরও বাড়বে; ফলে তাদের বিষয়টি নিয়েও চিন্তা করা হচ্ছে।
মেট্রোরেলের দ্বিতীয় ধাপের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ হবে জানিয়ে পরিচালক আরও বলেন, আগামী জুলাই থেকে আগরগাঁও-মতিঝিল পর্যন্ত পারফরম্যান্স টেস্ট শুরু হবে মেট্রোরেলের। ডিসেম্বরের মধ্যে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালানোর লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে পারফরম্যান্স টেস্ট শুরু হচ্ছে।
ডিসেম্বরের মধ্যে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালানোর লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে পারফরম্যান্স টেস্ট শুরু হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। আরও বলেন, ভায়াডাক্টের ওপরের তার টানা হয়ে গেছে, আর বিদ্যুতের রিসিভিং সাব-স্টেশনের কাজ চলছে।
প্রকল্প সূত্রে জানিয়েছে, বিজয় স্মরণী; ফার্মগেট; কাওরানবাজার; শাহবাগ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; সচিবালয়; মতিঝিল স্টেশনের কাজ গড়ে ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ঢাকার উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রথম মেট্রোরেল যেটা এমআরটি লাইন-৬ নামে পরিচিত। এ প্রকল্প সরকার হাতে নেয় ২০১২ সালে। ২৮ ডিসেম্বর এ পথের প্রথমাংশ উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চালু হলেও দ্বিতীয় অংশ আগারগাঁও থেকে মতিঝিল ২০২৩ সালের শেষ দিকে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। আর মতিঝিল থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত বর্ধিতাংশ চালু হতে পারে ২০২৫ সালে।
এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পের মূল ব্যয় ছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। পরে মতিঝিল থেকে কমলাপুর বাড়তি অংশ যোগ হওয়ায় ব্যয় বাড়ে ১১ হাজার ৪৯৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা। সর্বমোট ব্যয় দাঁড়ায় ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকায়। এর মধ্যে উন্নয়ন সহযোগী জাইকার অর্থায়ন ১৯ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা ও সরকারি অর্থায়ন ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৩
এনবি/এমজে