মাদারীপুর: ঘরে ওড়নায় পেঁচানো অবস্থায় ঝুলছিল গৃহবধূর মরদেহ। কিন্তু গৃহবধূর স্বামী ও তার পরিবারের কাউকেই পাওয়া যাচ্ছিল না।
প্রতিবেশীদের খবরে পুলিশ এসে গৃহবধূর সেই ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সন্ধ্যায় মাদারীপুরের সদর উপজেলার দুধখালি ইউনিয়নের এওজ গ্রামে।
নিহত ওই গৃহবধূর নাম লিয়া মনি আক্তার। এওজ গ্রামের ছোবাহান কবিরাজের মেয়ে তিনি।
নিহতের স্বজন ও প্রতিবেশীদের দাবি, যৌতুকের বলি হয়েছেন লিয়া। তাকে হত্যা করে ঘরে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়েছেন স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন।
অভিযুক্ত স্বামীর নাম মাসুদ সরদার। এওজ গ্রামের কালাম সরদারের ছেলে তিনি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
তিনি জানান, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লিয়া মনি নামে এক গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ভূক্তভোগীর পরিবার মামলা দিলে তদন্তে করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
জানা গেছে, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য লিয়া মনিকে চাপ দিতে থাকেন তার স্বামী মাসুদ। এরপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনও চলছিল লিয়ার ওপর। বৃহস্পতিবার দুপুরেও যৌতুকের জন্য লিয়াকে নির্যাতন করেন তার স্বামী। আশপাশের লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে পুলিশকে জানায়। পুলিশ এসে লিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে মাদারীপুর মর্গে পাঠায়। এসময় ওই বাড়িতে অন্য কেউ ছিলেন না।
ঘটনার পরই লিয়ার স্বামী ও তার পরিবার গা-ঢাকা দিয়েছে বলে দাবি প্রতিবেশীদের।
নিহত লিমার বাবা ছোবাহান কবিরাজ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে পুনরায় যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দেয় মাসুদ ও তার পরিবার। এসময় বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে অস্বীকার করলে মাসুদ ও তার পরিবার শারীরিক নির্যাতন করে আমার মেয়েকে। মারধরের ফলে লিয়া মনি মারা যায়। আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে আমার মেয়ের লাশকে ওড়না দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে তারা। ’
নিহতের বোন সাবিনা অভিযোগ করে বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে আমার বোনকে যৌতুকের টাকার জন্য মেরে ঘরে ঝুলিয়ে রাখা হয়। আমরা মাসুদ ও তার পরিবারের সবার ফাঁসি চাই। আমার বোনের সঙ্গে যা ঘটেছে পৃথিবীর অন্য কোনো মেয়ের সঙ্গে যেন না ঘটে। আমরা সরকার ও প্রশাসনের কাছে বিচার চাই। ’
বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, মার্চ ৩১,২০২৩
এসএএইচ