ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ঈদে দই ছাড়া জমে না বগুড়াবাসীর আপ্যায়ন

কাওছার উল্লাহ আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২৩
ঈদে দই ছাড়া জমে না বগুড়াবাসীর আপ্যায়ন

বগুড়া: ঈদে দই ছাড়া আপ্যায়ন জমে না বগুড়াবাসীর। অতিথি আপ্যায়নে শেষ মুহূর্তে সবাই ছুটছেন মিষ্টান্ন সামগ্রীর দোকানগুলোতে।

তবে এসব দোকানে সবার আগ্রহের কেন্দ্রে দই। তাই মিষ্টান্নের দোকানে দই ঘিরে লেগেছে ভিড়।

শুক্রবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে দেখা গেছে, শেষ মুহূর্তে বগুড়া শহরের নামকরা বিভিন্ন হোটলে, শো-রুম ও মিষ্টির দোকানগুলোতে ছুটছেন ক্রেতারা। ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানিরা।  

দেশজুড়ে রয়েছে বগুড়ার দইয়ের খ্যাতি। প্রায় ২০০ বছর আগে পৌর এলাকার ঘোষপাড়ার ঘোষ বংশের লোকজন নিজেদের গৃহপালিত গাভীর দুধ থেকে দই তৈরি শুরু করেন।  

এ জেলার দই স্বাদে ও গুণেমানে অনন্য। এ কারণে এখানকার গৃহিণীরা অতিথিকে ঈদে পোলাও, মাংস খাওয়ার পর খ্যাতির দই দিয়ে আপ্যায়ন করানোকে অনেকটা গৌরব মনে করে থাকেন। ঝাঁল খাওয়ানো শেষে প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন, নিমন্ত্রণে আসা অতিথিকে খ্যাতির এই দই খাওয়ানোটা বগুড়াবাসীর রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। তবে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দইসহ বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন সামগ্রীর দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা- এমন অভিযোগ ক্রেতাদের। আর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ব্যবসায়ীরা।

দই ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ার কথা স্বীকার করলেও এর যথেষ্ট কারণ দেখাচ্ছেন। এরই মধ্যে দুধের দাম বারতিতে চলে যায়। প্রতি কেজি দুধের দাম ৬০ টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে ৮৫-১০০ টাকা দরে কিনতে হয়েছে। আর দই তৈরির প্রধান উপাদানই হলো দুধ। এ কারণে দুধের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে অন্যান্য সময়ের মতো সীমিত লাভ ধরেই তারা দই বিক্রি করছেন মন্তব্য ব্যবসায়ীদের।

জেলা শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিক্রেতারা জানান, বর্তমানে প্রতি পিস স্পেশাল সরা দই ২৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা, বাটি দই ১৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫০ টাকা, ক্ষিরসা ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা, চমচম, মৌচাকা, কালোজাম (বড়) মিষ্টি প্রতিকেজি ৩৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৮০ টাকা, কালোজাম (ছোট) ২৮০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩২০ টাকা, রাজভোগ ৩২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৫০ টাকা, হাসি-খুশি ৩৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৫০ টাকা, কমলা (ছোট), লালমণ ৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৩০ টাকা, সন্দেশ ৪৭০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। শহরের নামের খ্যাতি ছড়ানো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে দইসহ এসব মিষ্টান্ন সামগ্রীর দাম কেজি প্রতি আরও ৩০-৪০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে বলে জানা যায়।

ক্রেতা কায়সান, রুহুল খান, তামিম ইকবাল, সোনিয়া বেগম বাংলানিউজকে বলেন, ঈদে প্রতিটি বাড়িতে চলে ভাল রান্নার আয়োজন। সেই সঙ্গে পরিবার ও আত্বীয়-স্বজন নিয়ে এক সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া। এমন উৎসবে দই বিয়োগ মানা অসম্ভব। তাই দই কিনতে শহরে প্রবেশ করেছেন তারা।

তারা বলেন, শেষ মুহূর্তে নামি-দামি প্রায় সব দোকানেই দাম কিছু কম-বেশি করে মিষ্টি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে দইয়ের ক্ষেত্রে চিত্রটা আলাদা। একটু নামকরা প্রতিষ্ঠান হলেই প্রতি সরা দইয়ের বিপরীতে বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে যোগ করেন এসব ক্রেতা।

মহরম আলী দই ঘরের পরিচালক মোহাম্মদ নিয়ামুল ওয়াকিল বাংলানিউজকে বলেন, দুধের দাম প্রতি কেজি ৬০ টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে ৮৫-১০০ টাকা দরে কিনতে হয়েছে। আর দই তৈরির প্রধান উপাদানই হলো দুধ। যে কারণে দুধের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে অন্যান্য সময়ের মতো অল্প লাভ ধরেই আমরা দই বিক্রি করছি।

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২৩
কেইউএ/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।