ঢাকা: বছরের বিশেষ দিনগুলোতে হাতিরঝিল হয়ে ওঠে রাজধানীবাসীর অঘোষিত বিনোদন কেন্দ্র। ঢাকার দুই প্রান্ত থেকেই ঘুরতে আসেন মানুষ এই লেকের চারপাশে।
বুধবার (২৬ এপ্রিল) হাতিরঝিল ঘুরে দেখা যায়, দুই পাশের সংযোগ সেতুগুলোর পাশের রাস্তায় ভিড় করেছে বিভিন্ন বয়সের ছেলে-মেয়েরা। কেউ আছন পরিবারের সঙ্গে। তরুণ-তরুণীরা ব্যস্ত সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করায়। আবার কেউ ওয়াটার বোট বা নৌকা ভ্রমণ করে ঝিলের বাড়তি আনন্দ উপভোগে ব্যস্ত সময় পার করেছেন।
ঝিলপাড়ে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছিলেন মোহম্মদ আসলাম। কথা হলে তিনি বলেন, ‘স্ত্রীকে নিয়ে বোটে ঘুরলাম। ভাল লাগলো। আসলে এমন খোলামেলা পরিবেশ রাজধানীতে হাতিরঝিল ছাড়া দ্বিতীয়টি আর নেই। ’
মিরপুর থেকে পরিবার নিয়ে হাতিরঝিলে এসেছেন আরিফ বিল্লাহ। বাসে করে পুরো হাতিরঝিল ঘুরে অপেক্ষা করছিলেন নৌকা ভ্রমণের জন্য। তিনি বলেন, ‘সাধারণত ঢাকায় ঘোরার জায়গা নেই। যেগুলো আছে তাতে অনেক জনসমাগম থাকে। হাতিরঝিল অনেক বড়। তাই ঘুরে শান্তি পাওয়া যায়। ’
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া হাসনাত বলেন, ‘মাঝে মাঝেই আসা হয় এখানে। তবে ঈদের সময় প্রতিবার আসি। বন্ধুদের মোটরসাইকেলে ঘুরি। এখানে একটাই সমস্যা পানিতে গন্ধ অনেক। লেকের ধারে বেশিক্ষণ থাকা যায় না। ’
এদিকে ঈদ উপলক্ষে হাতিরঝিলের দুই ব্রিজের পাশে ও পুলিশ প্লাজার পেছনে জমজমাট হয়ে উঠেছে খাবারের দোকানগুলো। বিশেষ করে ফুচকা, ভেলপুরি, চটপটি, ছোলা, মমো, চিকেন ফ্রাই বেশি বিক্রি হচ্ছে। অনেকেই হাতিরঝিলের লেকপাড়ের গোল চত্বরে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। কেউ আবার রাস্তার পাশের দোকানগুলোতে বসে নানা পদের খাবার খাচ্ছেন। দুই অংশের উড়াল সড়কের নিচে খাবারের দোকানেও ভিড় অনেক।
ছোটদের খেলনার ভ্রাম্যমাণ দোকান, বেলুন—এগুলোর প্রতিও আগ্রহ রয়েছে ক্রেতাদের। খেলনা ও বেলুন বিক্রেতা সেলিম বলেন, ‘প্রতিদিন বিকেলেই এখানে আসি। তবে ঈদের সময় মানুষ বেশি থাকে। বাচ্চা আসে অনেক। বেচাবিক্রি ভালো হয় তখন। ’
হাতিরঝিলের চারপাশের বিভিন্ন রেস্তোরাঁর ওয়েটাররা জানান, ঈদের এই কয়েকটা দিন ভিড় অনেক বেশি। তন্দুরি চিকেন ও চায়নিজ খাবারের কদর বেশি এখানে। ইন্ডিয়ান জনপ্রিয় খাবার দোসা, চিকেন, কাবাব কম দামে প্যাকেজ আকারে বিক্রি হচ্ছে। সেগুলোর প্রতি মানুষের আগ্রহও আছে বেশ।
হাতিরঝিল ছাড়াও এদিন বিজয় সরণিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার, চন্দ্রিমা উদ্যান, রমনা পার্কেও ছিল দর্শনার্থীদের ভিড়। দুপুরের পর থেকেই ভিড় বাড়তে দেখা যায় সব জায়গাতে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬
এইচএমএস/এমএমজেড