ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নাদিম হত্যা: খুনিদের সর্বোচ্চ বিচারের দাবিতে বামনায় মানববন্ধন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট     | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২০ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২৩
নাদিম হত্যা: খুনিদের সর্বোচ্চ বিচারের দাবিতে বামনায় মানববন্ধন

বরগুনা: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট গোলাম রাব্বানী নাদিমকে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সব আসামিদের গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বামনা উপজেলায় কর্মরত সব সাংবাদিকরা।  

শনিবার (১৭ জুন) বামনা প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনসহ সুশীল সমাজের নেতারা অংশ নেন।

এ সময় বক্তব্য দেন- বামনা প্রেসক্লাব সভাপতি নেসার উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক নাসির মোল্লা, সাবেক সভাপতি ওবায়দুল কবির আকন্দ দুলাল, মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম বামনা উপজেলা সভাপতি হাবিবুর রহমান, বরগুনা জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, সাংবাদিক মনোতোষ হাওলাদার প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দিন দিন সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। সাংবাদিক নাদিম হত্যার সঙ্গে যতবড় প্রভাবশালীরাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ বিচারের দাবি জানাচ্ছি। এই বর্বরোচিত ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হলে আমরা সাংবাদিকরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার (১৪ জুন) রাতে বাড়ি ফেরার পথে বকশিগঞ্জের পাথাটিয়ায় পৌঁছালে অস্ত্রধারী ১০-১২ জন দুর্বৃত্ত নাদিমকে পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এরপর রাত ১২টার দিকে সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল পৌনে ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।  

নাদিম হত্যাকাণ্ডে এ পর্যন্ত প্ল্যানমেকার চেয়ারম্যান বাবুসহ ১২ জনকে আটক করা হয়েছে।

সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে কশীগঞ্জের সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২৫ জনকে আসামি করে বকশীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেছেন।

নিহত সাংবাদিক নাদিম বাংলানিউজের জামালপুর করেসপন্ডেন্ট ও একটি বেসরকারি টেলিভিশনের উপজেলা প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি বকশিগঞ্জ উপজেলার নিলাখিয়া ইউনিয়নের গোমেরচর গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে।

বকশীগঞ্জের সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বাবুর অপকর্ম নিয়ে নিউজ করার জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে দাবি নাদিমের স্বজনদের।

মৃত্যুর আগে নাদিম নিজেও হামলার শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। এর আগে গত ১০ মে ইউপি চেয়ারম্যান বাবুকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। এ নিয়ে বাংলানিউজে ‘দুইবার বিয়ের পরও সন্তান-স্ত্রীকে অস্বীকার করছেন ইউপি চেয়ারম্যান!’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে ১৪ মে তার স্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে ‘আমি আমার স্বামী চাই, একসঙ্গে সংসার করতে চাই’ শিরোনামে বাংলানিউজে আরও একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর ২০ মে সাবিনা ইয়াসমিন তার স্বামী মাহমুদুল আলম বাবুকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার অথবা পদ থেকে তার অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। বাবু জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ নিয়েও বাংলানিউজে ‘আ.লীগ থেকে স্বামীর বহিষ্কার চেয়ে স্ত্রীর আবেদন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।  

এর আগে, গত ১৪ মে ময়মনসিংহ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে জামালপুরের নাদিমসহ চার সাংবাদিকের নামে মামলা করেন সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বাবু। ৩০ মে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন।

নিহত নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগমের অভিযোগ, ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু সংবাদ প্রকাশকে কেন্দ্র করে নাদিমের ওপর অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। আগেও তিনি নানাভাবে তাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করেছেন। ওই ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজনই তাকে হত্যা করেছেন। তিনি এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

এরও আগে গত ১১ এপ্রিল হামলার শিকার হয়েছিলেন নাদিম। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিনা বেগমের সমর্থকরা এ হামলা করেন। গত ১০ জানুয়ারি ‘বকশীগঞ্জে আ. লীগের কমিটিতে রাজাকারের সন্তান, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিবাদ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের জেরে হামলার শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি।
 

আরও পড়ুন
নাদিম হত্যাকাণ্ড

বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।