নাটোর: নাটোরের গুরুদাসপুরে বঙ্গবন্ধু টেকনিক্যাল বিজ্ঞান ও আইসিটি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষের অফিস কক্ষের সামনে আমের বস্তায় রাখা বোমাটি ১৮ ঘণ্টা পর নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।
রোববার (১৭ জুন) দিনগত রাত ১টার দিকে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ও বোম্ব ডিসপোজাল টিমের সদস্যরা বোমাটি নিষ্ক্রিয় করেন।
পরে রাতেই এক ব্রিফিংয়ে সিটিটিসির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের বোমা বিশেষজ্ঞ টিমের লিডার পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) শফিউদ্দিন শেখ জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, এটি শক্তিশালী বোমা। পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বস্তাটিতে বোমা শনাক্ত করতে সক্ষম হই। এটি একটি স্যুটকেসের ভেতরে বোমাটি রাখা হয়েছিল। যার মধ্যে ছিল, ককটেল জাতীয় তিনটি বস্তু, পেট্রোল বোমার তিনটি বোতল এবং প্লাস্টিকের জারের মধ্যে কেমিকেল জাতীয় বস্তু। টানা তিন ঘণ্টা চেষ্টার পর বোমাটি নিষ্ক্রিয় করা হয়। ধ্বংস করা বোমার আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। সেটি কেমিকেল ল্যাবে টেস্টের জন্য পাঠানো হবে। সেখানে পরীক্ষার পর জানা যাবে, বোমাটিতে কি জাতীয় বিস্ফোরক ছিল।
এদিকে বঙ্গবন্ধু সরকারি টেকনিক্যাল বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের বারান্দায় প্লাস্টিকের বস্তা পাওয়া নিয়ে শনিবার সকাল থেকে রাত ১টা পর্যন্ত ছিল নানা জল্পনা-কল্পনা এবং আতঙ্ক। দুপুর ২টার দিকে র্যাব-৫ (রাজশাহী) এর বোমা ডিসপোজাল ইউনিট এসে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বোমার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি। কারণ তাদের কাছে সেরকম যন্ত্রপাতি ছিল না। এজন্য অধিক উচ্চতর যন্ত্রপাতি ও বোমা বিশেষজ্ঞ দল আনার জন্য ঢাকায় র্যাবের হেডকোয়ার্টারে খবর পাঠানো হয়। পরে তারা এসে বোমাটি নিষ্ক্রিয় করেন।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ারুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, শনিবার (১৭ জুন) সকালে পৌর শহরের বঙ্গবন্ধু সরকারি টেকনিক্যাল বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষের অফিস কক্ষের দরজা ঘেঁষে কেউ একটি প্লাস্টিকের বস্তা রেখে যান। ওপরে লেখা- প্রিন্সিপাল বঙ্গবন্ধু কলেজ, গুরুদাসপুর: আম্রপালি ৩০ কেজি।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে অধ্যক্ষ কলেজে আসেন। দরজা ঘেঁষে রাখা কার্টনে বিশেষবার্তা লেখা থাকায় সন্দেহ হয় তার। অন্য শিক্ষকদের সহায়তায় থানা পুলিশকে খবর পাঠান তিনি। অধ্যক্ষের ফোন পেয়ে সেখানে একদল পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশের সন্দেহের কারণে প্যাকেটটি খুলতে র্যাবকে খবর পাঠানো হলে বেলা ২টার দিকে র্যাবের বোমা ডিসপোজাল ইউনিট এসে তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে।
তবে বোমা থাকার বিষয়টি তখনও নিশ্চিত করতে পারেননি র্যাব। এজন্য পরে ঢাকা থেকে এসে বোমাটি নিষ্ক্রিয় করা হয়।
ওসি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বোমা রাখায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, কলেজটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটি পক্ষের সঙ্গে মামলা চলছে। এর জের ধরে সম্প্রতি প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে (অধ্যক্ষকে) ও কলেজটি উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। সে উদ্দেশে বোমাটি রাখা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৬ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২৩
এসআই