কক্সবাজার: কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এতে জেলার নয় উপজেলার ৭১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬০টি প্লাবিত হয়েছে।
এছাড়া জেলার মহেশখালী, কুতুবদিয়া, ঈদগাঁও, রামু, টেকনাফ, উখিয়া ও সদর উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার তিন লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত দুদিনে পাহাড় ধস, সাপের কামড় ও বানের জলে ভেসে জেলাটিতে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (৭ আগস্ট) রাত থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, চকরিয়া-আনোয়ারা আঞ্চলিক মহাসড়ক, টেকনাফ-কক্সবাজার সড়ক এবং অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
বন্যা কবলিত এলাকার রোপা আমন, মৌসুমি শাক-সবজি, রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সোমবার রাতের পর থেকে নতুন নতুন এলাকায় পাহাড়ি ঢলের পানি ঢুকে পড়ছে। মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর পানি মঙ্গলবারও (৮ আগস্ট) বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদী, খাল ও ছড়ার অন্তত অর্ধশতাধিক এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
জেলা প্রশাসনের প্রতিবেদনে দেখা যায়, জেলার নয় উপজেলার ৬০ ইউনিয়নে প্রায় তিন লাখ মানুষ বন্যা কবলিত। এর মধ্যে চকরিয়া উপজেলার পৌরসভা ও ১৮টি ইউনিয়নের দুই লাখ ১০ হাজার এবং পেকুয়া উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের ৮৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতি এক কোটি ৪০ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে জেলার ২০৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
গত তিনদিনে কক্সবাজারে ৩৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান।
তিনি বলেন, আরও এক সপ্তাহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে। বর্তমানে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে তিন সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, জেলার নয় উপজেলার ৭১ ইউনিয়নের মধ্যে ৬০ ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এসব ইউনিয়নের প্রায় তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে চকরিয়া ও পেকুয়ার মানুষ। বন্যা দুর্গতদের জন্য এর মধ্যে দুই লাখ নগদ টাকা ও ৪৯ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় জেলা ও উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০২৩
এসবি/আরআইএস