ঢাকা: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান বলেছেন, চট্টগ্রামের বন্যা দুর্গত বিভিন্ন উপজেলায় সহায়তা হিসেবে মোট ৭০ লাখ টাকা, ১০০ মেট্রিক টন চাল ও শুকনো খাবারের ২১ হাজার প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৯ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘টানা পাঁচদিনের ভারী বর্ষণে, পাহাড়ি ঢলের সৃষ্টি হয়। সেই ঢলের ফলে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, সাতকানিয়া, লোহাগড়া উপজেলা; কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা; বান্দরবানের রামু উপজেলা এবং রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ির কিছু জায়গা প্রবলভাবে প্লাবিত হয়। হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে আমাদের মাঠ প্রশাসন, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা উদ্ধার ও মানবিক সহায়তা দিতে কাজ শুরু করেন। ’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সেনা ও নৌবাহিনী মোতায়েন করা হয়। তারা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দুর্গত এলাকার মানুষকে উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে গেছে। সেখানে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চলমান আছে। গত জুলাই মাসের ৩ তারিখে আমরা প্রত্যেক জেলায় আপদকালীন দুর্যোগ মোকাবিলায় ২০০ টন চাল, ১০ লাখ টাকা এবং ২০০০ প্যাকেট শুকনো খাবার মজুত রেখেছিলাম। সেই মজুত থেকে দুর্গত এলাকায় তাৎক্ষণিক সহায়তা পৌঁছে যায়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত ৭ আগস্ট চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে ১০ লাখ টাকা, ১০০ টন চাল ও তিন হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার প্রেরণ করি। আজকে আমরা জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করে চকরিয়া, পেকুয়া, লোহাগড়ায় ১০ লাখ টাকা, ১০০ টন চাল ও তিন হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। আমরা এ পর্যন্ত ৭০ লাখ টাকা, ২১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ৭০০ টন চাল আমরা বরাদ্দ দিয়েছি। একই সঙ্গে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও পানির বোতল দেওয়া হয়েছে। ’
এনামুর রহমান বলেন, এখন বৃষ্টি নেই। পানি কমতে শুরু করেছে। নতুন করে আর বন্যার আশঙ্কা নেই। আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। প্রধানমন্ত্রী সবসময় আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তিনি আজকেও ফোন দিয়ে মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি ও বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন। তার নেতৃত্বে শুক্রবার একটি প্রতিনিধি দল বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পাওয়ার পর আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক ডাকা হবে। সেখানে আমরা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ রাখবো- মাতামুহুরি, সাঙ্গু ও হালদা নদীগুলো যাতে খনন করা হয়।
তিনি বলেন, এবার পাহাড় ধসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মা ও এক সন্তান মৃত্যুবরণ করেছেন। এছাড়া পেকুয়ায় মাটির ঘর ধসে তিনজন মারা গেছেন। এবার বৃষ্টিপাত দেখে পাহাড়ি এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামে কোন মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। রাঙ্গামাটিতে ২৩৫ জায়গায় পাহাড় ধস হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০২৩
জিসিজি/এসআইএস